Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বছরের শুরু সংসদে, শেষ কারাগারে

admin

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:১৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:১৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
বছরের শুরু সংসদে, শেষ কারাগারে

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
বেশ আলোচিত একটি নাম ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ফেসবুকের আশীর্বাদে দেশে আলোচিত ব্যক্তিদের মধ্যে নিজের স্থান করে নেন তিনি। সচেতনতামূলক ভিডিও পোস্ট করার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, প্রশংসা কুড়ান। আবার সমালোচনাও কম ছিল না।

তুমুল এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে হয়ে যান এমপি।ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দাপিয়ে বেড়ান চুনারুঘাট মাধবপুর উপজেলা।

কিন্তু ৫ আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেকায়দায় পড়েন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমন আইন পেশার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে এলাকায় উন্নয়নে তিনি নিজ অর্থায়নে ছোট ছোট ৫০টির বেশি ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তা করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

Manual7 Ad Code

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন। এ নির্বাচনে তিনি সাবেক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে ১ লাখ ৬৯ হাজার বেশি ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।

Manual1 Ad Code

ব্যারিস্টার সুমন চলতি বছরের শুরুর দিকে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করে আলোচিত হন।

জুলাই মাসের প্রথম দিকে ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার হুমকির ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা চলে। হুমকির প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। পরে সোহাগ নামে এক হুমকিদাতাকে পুলিশ গ্রেফতার করলে জানতে পারে, ব্যরিস্টার সুমনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেই হুমকিদাতা গল্প সাজিয়েছিল।

কোটা আন্দোলন শুরু হলে তিনি প্রথমে নীরব থাকলেও পরে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ৫ আগস্টের আগে তিনি টানা কয়েকদিন সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আলোচনা সমালোচনায় পড়েন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরমধ্যে তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জে ও ঢাকায় একাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়। তখনও তিনি পুনরায় বক্তব্য দিয়ে ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন বলে বুঝানোর চেষ্টা করেন। ভিডিওবার্তা পোস্ট করার পর পর নেটিজেনবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অধিকাংশ মানুষ তার সমালোচনা করে গ্রেফতার দাবি করেন। কিন্তু এর আগে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে তার গাড়িতে গুলি থাকার কথা বলেন তিনি। বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র সমাজ।
এ নিয়ে সুমনের ভোলবদলের ভিডিওতে তানভীর আহমেদ আরজেল কমেন্ট করেন, ‘৪ আগস্ট কে বলেছিল ‘আমার গাড়ির পেছনে ২০ রাউন্ড (গুলি) আছে! ছাত্ররা আক্রমণ করলে সেগুলো ইউজ করব!’ তুমি দেশে আসো ভাইয়া। কিচ্ছু ভুলি নাই! কোনোদিন ভুলব না ইনশাআল্লাহ।’

কমেন্ট বক্সে সায়েদ আনোয়ার বলেন, ‘আপনি একজন দলকানা লোক। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে ভালোবাসি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আপনার কার্যক্রম দেখে বড়ই হতাশ হয়েছি। একজন ভালো মানুষ হিসেবে আপনাকে অনুরোধ করছি, আগামী নির্বাচনে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আপনি আবার দাঁড়াবেন এবং দেশ ও দশের সেবা করবেন’।

Manual4 Ad Code

ডা. শেখ ফরিদ লিখেন, ‘আপনি সব সময় লাইম লাইটে থাকার জন্য যা যা করা দরকার তাই করে গেছেন। মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে সেলেব্রেটি হয়ে পড়ে এমপি বনে গেছেন। যদিও আপনার টার্গেট আরও অনেক বড় কিছু ছিল। শেষমেশ দালালি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে গেলেন। মানুষ আপনাকে ক্ষমা করবে না মি. সুমন। কারন আপনি তাদের বিশ্বাসের জায়গায় আঘাত করেছেন’।

Manual6 Ad Code

২১ অক্টোবর রাতে তিনি মিরপুরের তার বোনের বাসা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সুমন। তখন ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড আইডি থেকে ব্যারিস্টার সুমন লেখেন, আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দো’আ করবেন সবাই।

শেয়ার করুন