বৃষ্টি বিড়ম্বনায়ও সিলেটে পর্যটকদের ঢল
২৫ এপ্রি ২০২৩, ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
ঈদের পর এবার সরকারি ছুটি মাত্র একদিন। তাই ঈদের পরদিন অর্থাৎ রবিবারই সিলেটে সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম হবে- এমন প্রত্যাশা ছিল পর্যটন ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু সেই আশায় গুঁড়েবালি দিয়েছে বৃষ্টি। যারা অনলাইনে হোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন তাদের অনেকেই রবিবারের বুকিং বাতিল করেছেন।
তবে আবহাওয়া অনুক‚ল হওয়ায় গতকাল সোমবার সিলেটে বিপুল সংখ্যক পর্যটক সমাগম হয়েছে। কয়েক হাজার পর্যটকের পদচারণায় মূখর ছিল সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো।
সিলেটে ঈদের দিন বিকালে চা বাগানগুলোতে স্থানীয় পর্যটকরা ভিড় করেন। এবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। ঈদের দিনের আনন্দকে আরো রাঙিয়ে নিতে ঈদের দিন শনিবার বিকেলে সিলেটের মালনীছড়া, লাক্কাতুড়া ও তারাপুরসহ বিভিন্ন বাগানে পর্যটকদের ভিড় জমে। কেউ কেউ আবার ঈদের দিন বিকেলে জাফলং, সাদাপাথরসহ দূরের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও ছুটে যান। তবে সংখ্যায় সেটা খুব বেশি নয়। তাই মূলত ঈদের পরদিন থেকে সিলেটে জমে ওঠে পর্যটনকেন্দ্রগুলো।
সিলেটের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগে বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে সিলেটে। পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাতে কেউ আসেন দু’দিনের জন্য, আবার কেউ আসেন তিনদিন সময় হাতে নিয়ে। অনেকে সিলেট ভ্রমণ শেষ করে চলে যান মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে।
এবার ঈদের পরদিন সিলেটে বৃষ্টি থাকায় পর্যটক আগমনে বিঘ ঘটে। যারা পরিবার নিয়ে সিলেটে বেড়াতে আসতে চেয়েছিলেন তারা অনেকেই রবিবারের বুকিং বাতিল করে দেন। এতে ঈদের পর্যটন ব্যবসা হোঁচট খায়। গেল বছর ঈদে সিলেটে এতো বেশি পর্যটক সমাগম হয়েছিল যে, হোটেল মোটেলে সিট পাননি পর্যটকরা। কিন্তু এবার তাতে ব্যতিক্রম হয়েছে। তবে গতকাল সোমবার থেকে সিলেটে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। গতকাল সোমবার সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, লালাখাল, শ্রীপুর, পান্তুমাই, সাদাপাথর, রাতারগুলসহ প্রায় সবকটি পর্যটনকেন্দ্রে ছিল উপচে পড়া ভিড়। পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে ছুটে এসেছেন অনেকে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার পথে ছিল দীর্ঘ গাড়ির সারি। এই সুযোগে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চালকরাও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগর থেকে পরিবার নিয়ে জাফলং বেড়াতে এসেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা খন্দকার আজিমুজ্জামান। তিনি জানান, পরিবার নিয়ে তিনি ঈদের পরদিন সিলেটে আসার কথা ছিল। দুইদিন সিলেট ঘুরে ফেরার কথা। কিন্তু ঈদের রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে শুনে তিনি রবিবারের হোটেল বুকিং বাতিল করেন। এখন একদিন ঘুরেই তাকে পরিবার নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ হোটেল গোল্ডেন সিটির মহাব্যবস্থাপক মলয় দত্ত মিষ্টু জানান, গেলবার হোটেলে পর্যটকদের জায়গা দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রুম খালি না থাকায় অনেক পর্যটক ফিরে গিয়েছিলেন। এবারের চিত্র ভিন্ন। গতকাল সোমবার হোটেলের সবকটি রুমে অতিথি থাকলেও আগের দিন রবিবার অর্ধেক রুমই খালি ছিল।
সিলেট হোটেল মোটেল এন্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সভাপতি এটিএম শোয়েব জানান, গতকাল সোমবার থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করলেও তা আশাব্যঞ্জক নয়। এরজন্য প্রতিক‚ল আবহাওয়ার পাশাপাশি সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন না হওয়াকে দায়ি করেন তিনি। শোয়েব বলেন, ‘সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্রকৃতিনির্ভর। কিন্তু আমরা সেই প্রকৃতিকে দিনের পর দিন ধ্বংস করে আসছি। এছাড়া পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে আমরা পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তুলতে পারিনি। পর্যটন আকর্ষন বাড়ানো গেলে দিন দিন পর্যটকদের সংখ্যা আরও কমবে।’