Beanibazarer Alo

  সিলেট     শনিবার, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভয়ংকর বিরল রোগে ‘দঙ্গল’ কন্যার মৃত্যু, কি সেই রোগ?

admin

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ভয়ংকর বিরল রোগে ‘দঙ্গল’ কন্যার মৃত্যু, কি সেই রোগ?

Manual6 Ad Code

বিনোদন ডেস্ক:
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই মারা গেছেন আমির খানের ‘দঙ্গল’ সিনেমার অভিনেত্রী সুহানি ভাটনগর। তিনি এই সিনেমায় আমির কন্যার ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ওই ছবিতে আমিরের মেয়ে ববিতা ফোগতের শিশু বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেন সুহানি।

কিন্তু কি কারণে মারা গেলেন সুহানি, শুরুর দিকে এর কারণ অজানা থাকলেও পরে রোগের উপসর্গ দেখে কিছুটা ধারণা করা যায়।

মৃত্যুর দুই মাস আগে সুহানির একটি হাত ফুলতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে সুহানির পরিবারত কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নেননি। কিন্তু তারা পরে লক্ষ্য করেন, সুহানির অন্য হাতও একইভাবে ফুলতে শুরু করেছে। এরপর তার পুরো শরীর ফুলে যায়। পরে জানা যায় সুহানি ডার্মাটোমায়োসাইটিস নামে এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

Manual8 Ad Code

সুহানির বাবা জানিয়েছেন, ২ মাস আগে প্রথমে তার হাত খুব ফুলে গিয়েছিল। তারপরে সেই ফোলা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কি কারণে এটা হচ্ছে সেটা কিছুতেই ধরা পড়ছিল না। অনেক চিকিৎসার পরেও যখন মেয়ে ভাল হচ্ছে না তখন সুহানির বাবা তাকে এইমস হাসপাতালে নিয়ে যান। ১১ দিন আগেই সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। এইমসই প্রথম ধরতে পারে রোগটি। তারপর আর তাকে বাঁচানো যায়নি।

ডার্মাটোমায়োসাইটিস হল এমন একটি বিরল রোগ, যে রোগ সাধারণত পেশি এবং ত্বকে হয়ে থাকে। ভাইরাল সংক্রমণে এই রোগটি হয়। তবে কোন ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ হয় বা কী কারণে এর সংক্রমণ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তা এখনও স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে এই রোগ মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধক শক্তি নষ্ট করে দেয়।

Manual1 Ad Code

এই রোগ বিরল হলেও এটি চিহ্নিত করার বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে। যেমন এই রোগের প্রথম লক্ষণ দেখা দেয় ত্বকে। ত্বকের রং পরিবর্তন হতে শুরু করে। ত্বক বেগুনি রঙের হয়ে যায়। ত্বক খসখসে হয়ে উঠে। ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। বিশেষ করে চোখের চারপাশে এবং পিঠের উপরের অংশে, কনুইয়ে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

Manual6 Ad Code

এরপর ত্বকের রং বদল বা খসখসে ভাবের সঙ্গে সঙ্গে চুলকানি শুরু হয়। বিশেষ করে মাথার ত্বক রোদের তেজ সহ্য করতে পারে না। ত্বকের পাশাপাশি পেশির সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষ করে নিতম্ব, উরু, বাহু বা ঘাড়ে দুর্বলতা, পা-কাঁধ-বাহু বা ঘাড়ে ব্যথা শুরু হয়। খাবার গিলতে সমস্যা হয়। কথা বলতে অসুবিধা হয়। হাতের আঙুল এবং পায়ের আঙুলে ব্যথা এবং রং পরিবর্তন হতে শুরু করে। ঠান্ডায় গাঁটের ব্যথা বাড়ে। সেই সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা শুরু হয়।

Manual2 Ad Code

ডার্মাটোমায়োসাইটিস রোগ যেভাবে নির্ণয় করা যায়

আপাতদৃষ্টিতে হঠাৎ করে এই রোগ সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন। অধিকাংশ লোকেই প্রাথমিক লক্ষণ দেখে বাত বা আর্থ্রাইটিসই বলে মনে করবেন। তাই এই রোগ চিহ্নিত করতে হলে সংক্রমণ বা পেশি ক্ষতি এবং প্রদাহের লক্ষণগুলি দেখতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ইলেক্ট্রোমিওগ্রাম (ইএমজি), পেশি কার্যকলাপ পরীক্ষা, পেশি বায়োপসি, পেশি টিস্যুর পরীক্ষা, ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং ( MRI) বা আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এছাড়াও যে পরীক্ষা গুলি থেকে এই রোগ নিশ্চিত করা যায় সেটি হল ত্বকের বায়োপসি, ক্যান্সার পরীক্ষা, সিএটি স্ক্যান, ডার্মাটোমায়োসাইটিস প্রায় ১৫ শতাংশ ক্যান্সারের সঙ্গে যুক্ত।

তাই শরীরে এমন লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। নয়তো কিছু বুঝে উঠার আগেই হয়ত অসহ্য যন্ত্রণা ভোগের পর প্রাণটাও চলে যেতে পারে।

শেয়ার করুন