মালয়েশিয়ায় ধর্ষণের দায়ে বাংলাদেশির ২২ বছরের জেল
১৮ নভে ২০২৩, ০৫:০৮ অপরাহ্ণ
প্রবাস ডোস্ক:
সৎ কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে বাংলাদেশি এক প্রবাসীকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মালয়েশিয়ার একটি দায়রা আদালত। একই সঙ্গে তাকে আরও ১৫ বার বেত্রাঘাতের সাজা দেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ফলে ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে সন্তানের জন্ম দেন। বুধবার মালয়েশিয়ার দায়রা আদালতের বিচারক সুরিতা বুদিন সৎ কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ওই বাংলাদেশিকে ২০ বছরে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে মালয়েশিয়ার পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দিন থেকে সাজা কার্যকরের মেয়াদ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের বিচারক।
বিচারক সুরিতা বুদিন বলেন, বাদি ও অভিযুক্তের বক্তব্য শোনার পর এই মামলায় আপোসের কোনো সুযোগ নেই। ১৩ বছর বয়সী সৎ কন্যার সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা ছিল অভিযুক্তের। কিন্তু তিনি অজাচার করেছেন।
দ্য স্টার বলছে, ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে মালয়েশিয়ার লাবু বাতু-১০ এর তেকির ওরাং আসলি গ্রামে সৎ কন্যাকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত ওই বাংলাদেশি। মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ৩৭৬বি ধারার আওতায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির ১০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতের সাজার কথাও এই ধারায় উল্লেখ করা আছে।
আদালতের মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেছেন মালয়েশিয়ার ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউট গোহ সিয়াও তুং। তবে মামলার শুনানির সময় অভিযুক্তের পক্ষে কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
কঠোর শাস্তির অনুরোধ জানিয়ে আদালতকে ডেপুটি প্রসিকিউটর বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও সদ্যজাত শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, তাদের উভয়ের ডিএনএ এক। আর অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনাস্থলে ছিলেন না এমন দাবির পক্ষে শক্তিশালী কোনো প্রমাণই পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার সময় মেয়েটির বয়স ১৩ বছর ছিল। তার মা মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যে কারণে মেয়েটি তার সুরক্ষা ও দেখাশোনার জন্য সৎ বাবার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত ব্যক্তি এর সুযোগ গ্রহণ করেছে।
‘‘ভুক্তভোগী শিশুটি ১৩ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগে অন্তত চারবার নির্যাতনের শিকার হয়। অথচ একটি শিশুর জীবন পড়াশোনা এবং সুখের দিকে মনোনিবেশ করার দরকার হয়। আর এই ঘটনা তার জীবনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এখন সে সিঙ্গেল মা। পাশাপাশি তাকে পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে হবে।’’