Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, একজনকে এয়ারপোর্ট থেকেই ফেরত

admin

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
যুক্তরাষ্ট্রে তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, একজনকে এয়ারপোর্ট থেকেই ফেরত

Manual3 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের পরই নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন স্টুডেন্ট ভিসায় আগতরাও টার্গেট হয়েছেন। এরই মধ্যে স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়ে নিয়মিত কাজ করছিলেন।

Manual1 Ad Code

এ ছাড়া পিএইচডি কোর্স করতে ঢাকা থেকে আমেরিকার জেএফএফ এয়ারপোর্টে অবতরণকারী আরেক শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইমিগ্রেশন বিভাগের জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সদুত্তর না পাওয়ায় তার ভিসা বাতিল করে ফিরতি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।

এমন উদ্বেগজনক তথ্য ২৭ জানুয়ারি এ সংবাদদাতাকে দিয়েছেন আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এবং আমেরিকা সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।

তিনি আরও জানান, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে ভিসা গ্রহণের সময় উল্লিখিত তথ্যের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন আমেরিকার জেএফকে এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস অফিসার। সঠিক জবাব না পেয়ে এয়ারপোর্ট থেকেই ফেরত পাঠানো হয়। অপরদিকে স্টুডেন্ট ভিসা লঙ্ঘন করে নিয়মিতভাবে কাজ করার তথ্য উদ্ঘাটিত হয় সংশ্লিষ্টদের সেলফোন ট্র্যাকিংয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজের পরিবর্তে ভিন্ন একটি স্থানে প্রতিদিনই দীর্ঘ সময় অবস্থানের তথ্য খতিয়ে দেখার সময় উদ্ঘাটিত হয় ভিসার শর্ত বাতিলের তথ্য। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভিসায় আগত অনেক এশিয়ানই বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, সুপার মার্কেট কিংবা ট্র্যাভেল এজেন্সি অথবা চিকিৎসকের প্রাইভেট ক্লিনিকে রিসিপশনিস্টের কাজ করছেন।

কেউ কেউ অনলাইনে ক্লাস করছেন। অবৈধ অভিবাসীদের ধর-পাকড়ের অভিযানে এহেন অপকর্মে লিপ্ত ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরাও ধরা পড়ছেন বলে নিউজার্সি, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়া, ম্যাসেচুসেট্স, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, মিশিগান, আরিজোনা থেকে জানা গেছে।

এদিকে আইসের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস অ্যানফোর্সমেন্ট) উদ্ধৃতি দিয়ে ফক্স নিউজের এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, সোমবার টেক্সাসের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮৪ জনসহ সারা আমেরিকা থেকে ১ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম ৭ দিনে গ্রেপ্তার হলো ৩৩ অবৈধ অভিবাসী। এরা সবাই নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল এবং সামাজিক শান্তি বিনষ্টের হুমকি বলেই অবৈধদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটে হেকসেথ ফক্স নিউজকে জানান, সোমবার আরও ৪ শতাধিক সৈনিককে টেক্সাসের সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে।

এর ফলে আগের সপ্তাহের তুলনায় বে-আইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীর সংখ্যা ৯০ ভাগ কমেছে বলেও দাবি করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। আইসের গ্রেপ্তার-অভিযানে সন্ত্রস্ত গোটা কমিউনিটি। জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ওজোনপার্ক, ব্রুকলিনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত পরিভ্রমণকারে সোমবার বেশির ভাগ রেস্টুরেন্ট, সুপার মার্কেট, গ্রোসারি স্টোরে গ্রাহকের মতো বিক্রেতার সংখ্যাও নগণ্য মনে হয়েছে। এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়েছে ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটিতে।

Manual5 Ad Code

টাইমস স্কোয়ার, ডাউনটাউন, মিডটাউন, আপটাউনের ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জানা গেছে, নিউইয়র্কে ন্যূনতম মজুরি হচ্ছে ঘণ্টায় ১৭ ডলারের মতো। অবৈধদের দিয়ে সেসব কাজ করিয়ে ঘণ্টায় ৫-৬ ডলার করে দিতে পারায় ব্যবসায় মুনাফা বেশি বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

Manual1 Ad Code

যদিও করোনা মহামারির পর অন্যসব পণ্যের মতো খাদ্য-বস্ত্র-বিনোদনের সব পণ্যের দামও দ্বিগুণ করা হয়েছে। অর্থাৎ অবৈধদের দিয়ে ব্যবসা চালাতে না পারলে লাভের অঙ্ক অনেক কমবে বলে ব্যবসায়ীরা ট্রাম্পের ওপর নাখোশ। এদিকে গ্রেপ্তারের পরই নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর বিমান ব্যবহার করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে ডিটেনশন সেন্টারের ৪১ হাজার শয্যা আগেই পূরণ হয়ে গেছে। এজন্য গ্রেপ্তারের পরই অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার এই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

Manual7 Ad Code

উল্লেখ্য, অনেক আগে থেকেই ১৭ লাখের বেশি অভিবাসীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের আদেশ জারি রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছেন গত ৪ বছর বাইডেন-কমলার আমলে অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রমকারীরা। এ সংখ্যা ২০ লাখের বেশি বলে বিভিন্নভাবে জানা গেছে। এদের সবাইকে গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বহিষ্কার করা সম্ভব না হলে বিপুল অর্থ লাগবে থাকা-খাওয়াবাবদ। সে ইস্যুতেও দুশ্চিন্তায় রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

সেদিকে লক্ষ রেখে যারা সীমানা অতিক্রমের পর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করবেন, তাদেরও সরাসরি মেক্সিকোতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে আবেদনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত। সব কিছু মিলিয়ে সারা আমেরিকায় অভিবাসী-সমাজে টেনশন আর অস্থিরতা বিরাজ করছে।

শেয়ার করুন