Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে নারকীয় হত্যাকাণ্ড, ইট-সুরকির স্তূপের নিচে মা-খালাসহ শিশুর লাশ

admin

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:০৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:০৫ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সিদ্ধিরগঞ্জে নারকীয় হত্যাকাণ্ড, ইট-সুরকির স্তূপের নিচে মা-খালাসহ শিশুর লাশ

Manual2 Ad Code

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা :
গত ৬ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করেই একসঙ্গে নিখোঁজ হন স্বপ্না আক্তার (৩৪), তার ছোট বোন লামিয়া আক্তার (২২) এবং লামিয়ার চার বছর বয়সি শিশুপুত্র আবদুল্লাহ। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া বড়বাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় আবদুল কাদেরের বাড়ির পাশের একটি ভাগাড়ে ইট-সুরকির স্তূপের নিচ থেকে নিখোঁজ ঐ তিন জনের টুকরা করা বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহত লামিয়ার স্বামী মো. ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।

Manual5 Ad Code

নিহত স্বপ্না ও লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত আবদুস সামাদের মেয়ে। তিন বোনের মধ্যে স্বপ্না সবার বড়, লামিয়া ছোট। তাদের মেজো বোন শিরিন আক্তার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহত স্বপ্না ও লামিয়ার বোন শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, গত ৬ এপ্রিল বোনদের সঙ্গে দেখা করতে লামিয়ার নতুন ভাড়া বাসায় গেলে বাসা তালাবদ্ধ দেখে তিনি ফিরে যান। এরপর থেকেই তাদের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। মনে করেছিলেন তারা কোথাও বেড়াতে গেছে।

Manual2 Ad Code

শুক্রবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার বড়বাড়ি পুকুরপাড়ের রাস্তার পাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে এক নারী একটি বস্তা থেকে মানুষের হাত বেরিয়ে থাকতে দেখে চিত্কার করে উঠেন। সঙ্গে সঙ্গে লোকজন জড়ো হয় এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইট-সুরকির স্তূপ সরিয়ে দুটি বস্তা উদ্ধার করে। একটি বস্তায় ছিল দুই নারীর খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ। মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। অন্য বস্তায় পাওয়া যায় ছোট্ট শিশু হাবিবের মরদেহ। বস্তা খোলার পর চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

Manual2 Ad Code

শিরিন আরো বলেন, ‘ঈদের আগে জামিনে বের হয় লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন। সে মাদকাসক্ত। একাধিকবার মাদক মামলায় জেল খেটেছিল।’ এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ইয়াসিন বলে তিনি দাবি করেন। ঘটনার সময়ও ইয়াসিন এলাকাতেই ঘোরাফেরা করছিল। তার সন্দেহজনক আচরণ স্থানীয়দের চোখে পড়ে সে। লাশ উদ্ধারের পর বিক্ষুব্ধ জনতা ইয়াসিনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

প্রতিবেশী ও নিহতদের স্বজনরা জানান, ইয়াসিনের কোনো উপার্জন না থাকায় লামিয়ার গার্মেন্টসের আয়ের ওপর পরিবার নির্ভর করত। নেশার টাকার জন্য মাঝে মধ্যেই চলত শারীরিক নির্যাতন।

Manual4 Ad Code

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনূর আলম বলেন, ‘আমরা তিনটি মরদেহ উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম ও হূদয়বিদারক। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ, অর্থসংকট এবং মাদকের কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’

শেয়ার করুন