Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে আইনজীবী পিতাকে খুন : ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসি

admin

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫ | ০৫:৪৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ | ০৫:৪৮ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সিলেটে আইনজীবী পিতাকে খুন : ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসি

Manual3 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ফ্ল্যাইট লে. শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ১ জনকে ৩ বছরের কারাদণ্ড আর ১ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী (মুন্না), মো. জাহের আলী এবং মো. আনসার আহমেদ। পাশাপাশি তাদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

মামলার রায়ে মাইক্রোবাস চালক মো. বোরহান উদ্দিনকে ৩ বছরের কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাছাড়া এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মো. ইসমাইল হোসেন রানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আনছারুজ্জামান জানান, আজ মঙ্গলবার (৬ মে) বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এই রায় ঘোষণা করেন।

তিনি আরো জানান, ৩০ জন স্বাক্ষির মধ্যে ১৯ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার সময় কোন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না, তারা পলাতক।

Manual6 Ad Code

জানা যায়, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। দুই কন্যা অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী, এক কন্যা ঢাকায় এবং অপর কন্যা সিলেট শ্বশুড়বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী পেশাগত কারণে সপরিবারে ঢাকায় থাকেন। ছোটপুত্র মুন্নাকে নিয়ে শামছুল ইসলাম চৌধুরী সিলেট নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকায় আজাদী-১১০ নং বাসায় বসবাস করতেন।

২০১১ সালের ১৭ জুলাই শব-ই-বরাতের রাতে নগরীর মীরবক্সটুলাস্থ বাসা থেকে নিখোঁজ হন শামসুল ইসলাম। এরপর মুন্না কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। পরে ২২ জুলাই মুন্না নিজেই আত্মগোপনে চলে যান। একটি সূত্র জানায়, তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন।

Manual1 Ad Code

এ ঘটনায় ওই বছরের ৪ আগস্ট মুন্নার বড়ভাই মাহমুদ আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর র‌্যাব-৯ সদস্যরা আনসার, বোরহান ও রানুকে আটক করে এবং তার মধ্যে আনসার ও বোরহান আদালতে জবানবন্দী দেন।

ঘটনার পর ২৭ আগস্ট পুলিশ সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদী থেকে শামছুল ইসলামের মরদেহের কিছু অংশ, পাঞ্জাবী ও টুপি উদ্ধার করে। পরে সেগুলো ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।

Manual2 Ad Code

অ্যাডভোকেট মো. আনছারুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে নামাজরত অবস্থা প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে প্রথমে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় গাড়িতে তুলে সুনামগঞ্জের ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এর কয়েকদিন পর সুনামগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সুরমা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুন্নাকে গাড়িচালকসহ তিনজন সহযোগীতা করেন।

Manual8 Ad Code

তিনি আরো বলেন, বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এই মামলার ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। একজন প্রবীণ আইনজীবীর এমন মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের রায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে তিনি সম্পন্ন করেন। তিনি জানান, চলতি বছরের ১০ মার্চ মামলাটি সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে আসে। যুক্তি তর্ক ও শুনানি হয় ২৪ এপ্রিল এবং আজ রায় হলো।

সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পেশকার মো. আহমদ আলী জানান, মুন্না তার বাবাকে বলেছিলেন মীরবক্সটুলার বাসার সামনের অংশ তার নামে লিখে দিতে। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুন্না প্রায়ই তাকে মানসিক নির্যাতন করতেন।

শেয়ার করুন