Beanibazarer Alo

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে দরগা থেকে শিশু চু*রি, অতঃপর যা হল…..

admin

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১০:০২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১০:০৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সিলেটে দরগা থেকে শিশু চু*রি, অতঃপর যা হল…..

Manual2 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

২৮ অক্টোবর ২০২৫ বিকাল সোয়া ৫টা। হয়রত শাহজালাল (র.) মাজার মহিলা ইবাদতখানার সামনের উঠোন। ইবাদতখানার ভেতরে ইবাদত-বন্দেগী শেষে বাইরে বেরিয়ে আসেন জকিগঞ্জের বাল্লা গ্রামের শাকিল আহমদের স্ত্রী রেহানা বেগম (২৮)। কোলে তার দেড় বছরের মেয়ে সিনহা আক্তার তাবাসসুম।

তিনি তাকে কোল থেকে নামিয়ে দেন আরও কয়েকটা বাচ্চার সাথে। হাঁটাহাটির এক পর্যায়ে হঠাৎ খেয়াল করেন তার মেয়েটিকে কোলে নিয়ে এক যুবক দ্রæত হাঁটছেন। তিনিও দ্রæত তাকে ধরতে গেলে মুহুর্তে ভীড়ের মধ্যে লোকটিকে হারিয়ে ফেলেন তিনি।

 

এরপর রেহানার জীবনে নেমে আসে নরক যন্ত্রণা। স্বামী ঘর থেকে বের করে দেন। পিতার বাড়ি ঠাঁই হলেও নিজের নাড়ীÑছেঁড়া ধনকে হারিয়ে কোথাও তার কোনো শান্তি মিলছিলনা। মানসিক যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে এই বয়সে ঘুরতে থাকেন রাস্তায় রাস্তায়। চেয়ে-চিন্তে কখনো এক বেলা কখনো দু’বেলা জুটাতে পারলে খেতেন, নাহলে উপোষ। সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বলে কথা!

সময় কাটছিল তার শাহজালাল (র.) মাজার প্রাঙ্গণ ও গ্রামের বাড়ি জকিগঞ্জে দৌড়াদৌড়িতে। তবে অধিকাংশ সময় পড়ে থাকতেন এই মাজার প্রাঙ্গনেই। আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন নিজের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার। একটা জিডিও দায়ের করেছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী মডেল থানায়।

 

 

 

এরপর কেটে গেছে প্রায় ৪৮ দিন। সোমবারও (১৫ ডিসেম্বর) তিনি শাহজালাল (র.) দরগাহ প্রাঙ্গণে হাঁটছিলেন। বাচ্চাদের দেখতে দেখতে নিজের বাচ্চাটার কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখেন এক যুবক তাকে দেখে অশ্লীল ইঙ্গিত করছে, কাছে ডাকছে।

Manual7 Ad Code

 

Manual3 Ad Code

 

 

কেঁপে উঠে রেহানার অস্তিত্ব। তার মেয়েটিকে নিয়ে হাওয়া হয়ে যাওয়া এতো সেই লোকটা। তিনিও দ্রæত তার কাছে ছুটে যান এবং কৌশলে নিয়ে আসেন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের কাছে। কয়েকজনকে জানিয়ে দেন এই সেই লোক যে তার মেয়েকে চুরি করেছিল দেড় মাস আগে। লোকজন ওকে ধরে এবং রেহানা তার জিডির তদন্ত কর্মকর্তাকে কল দেন অন্য কারো মোবাইল চেয়ে নিয়ে। ছুটে আসেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। লোকটাকে নেওয়া হয় হেফাজতে।

 

Manual2 Ad Code

 

 

তার নাম মো, আলী (২৭)। তিনি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার নোয়াপাড়া এলাকার হেলাল মিয়ার ছেলে। তবে কাজের সুবাদে তিনি থাকেন হবিগঞ্জে।

রেহানা জানান, তার কল পেয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং আলীকে তাদের হেফাজতে নিয়ে যান।

 

তিনি আরও বলেন, মো. আলী স্বীকার করেছে মেয়েটি তার দায়িত্বে তার স্ত্রী জেছমিনের (২৫) কাছেই আছে। তিনি নিঃসন্তান। তাই লালন পালন করতেই ওকে নিয়ে গিয়েছেন বলে সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

Manual7 Ad Code

 

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার বাচ্চা নেই। তাই বলে আমার মেয়েকে নিবে কেন?  পুলিশ আমাকে আশ্বাস দিয়েছে।

 

রেহানা অধির আগ্রহে অপেক্ষায় নিজের সন্তানকে বুকে নেওয়ার। জানালেন, স্বামীর মোবাইল বন্ধ তবে তিনি তার বাবার কাছে আলীকে ধরতে পারার বিষয়টি জানিয়েছেন।

 

 

 

এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মাঈনুল জাকির বলেন, আলী আমাদের হেফাজতে আছে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে। আপনাদেরকে আমাদের মিডিয়া কর্মকর্তার মাধ্যমে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

শেয়ার করুন