Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেট থেকে নিখোঁজ বিয়ানীবাজারের এক প্রবাসীর স্ত্রী

admin

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৩ | ০৪:৪৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ | ০৪:৪৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সিলেট থেকে নিখোঁজ বিয়ানীবাজারের এক প্রবাসীর স্ত্রী

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
স্বপ্ন ছিল আয়ারল্যান্ড যাবেন। সেখানে স্বামীকে নিয়ে বাঁধবেন সুখের নীড়। সে উদ্দেশ্যে আইইএলটিএস কোর্স করতে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেট মহানগরীর একটি প্রতিষ্ঠানে। ক্লাস করছিলেন নিয়মিত। তেমনি এক সকালে ক্লাসে যেতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন আয়ারল্যান্ড প্রবাসীর স্ত্রী ইমা। এরপর আর বাসায় ফিরেননি। দু’সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ ২১ বছরের ওই গৃহবধূ।

 

Manual2 Ad Code

আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নেয়ার পর সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়রি দায়ের করা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু এখনো কোনো হদিস মিলেনি তার। এ ব্যাপারে আদালতে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়েররও প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।

 

ইমার পুরো নাম তানিয়া আক্তার ইমা। বয়স মাত্র একুশ বছর। বিয়ে হয়েছে ছ’মাস আগে, গত জানুয়ারিতে। স্বামীর বাড়ি বিয়ানীবাজারের তিলপাড়া ইউনিয়নের পীরেরচক গ্রামে। স্বামী কলিম উদ্দিন গ্রেট বৃটেনের আয়ারল্যাণ্ডে থাকেন। তার বাবার বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার পূর্ব লক্ষিপ্রসাদ গ্রামে। ইমার বাবা আব্দুস শুকুর গত জানুয়ারিতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে মোটা অংকের টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর কলিম উদ্দিন স্ত্রীকে দ্রুত নিজের কাছে নিতে আইইএলটিএস করতে হেক্সাস মেজরটিলা শাখায় ভর্তি করে নিজ কর্মস্থল আয়ারল্যান্ড ফিরে যান। ইমাকে রেখে যান তার বড়বোনের বাসায়, মেজরটিলায়। অবশ্য ইমার বড়বোনও সপরিবারে ওমান থাকেন। তবে তার ননদ বেদেনা বেগমের পরিবারের সাথে ইমা ভালোই ছিলেন। কলিম স্ত্রীর লেখাপড়াসহ যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ নিয়মিত পাঠাতেন।

 

জিডি সূত্রে জানা গেছে, ইমা গত ২৭ জুন ক্লাস করতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর আর তিনি বাসায় ফিরেন নি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করে তাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করে না পেয়ে থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। গত ৪ জুলাই শাহপরাণ থানায় এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়রি করেন (নং ১৬৪) তার বাবা আব্দুস শুকুর। কিন্তু সপ্তাহখানেক পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোন হদিস দিতে পারেনি।

 

Manual5 Ad Code

এ অবস্থায় ইমার স্বামী ও বাবার বাড়ির প্রায় সবাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। উন্মাদপ্রায় তার মা ও শ্বশুর শ্বাশুড়ী ও স্বামী কলিম উদ্দিন। দুঃখ কষ্টে ভেঙে পড়েছেন পিতা আব্দুস শুকুর। তিনি জানান, অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম ছ’মাস আগে। ভালোই চলছিল তার সংসার। মেয়ের স্বামী তাকে নিজের কাছে আয়ারল্যান্ড নেয়ার কাজ শুরুও করেছেন। এ অবস্থায় আজ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আমার মেয়ে নিখোঁজ। আমি তার সন্ধানে হন্য হয়ে ঘুরছি। পুলিশের কাছে বারবার ছুটে যাচ্ছি। কিন্তু কোন হদিস পাচ্ছি না।

Manual5 Ad Code

 

তিনি তার মেয়েকে উদ্ধারের ব্যাপারে কার্য্যকর ভূমিকা রাখতে পুলিশ ও প্রশাসন, র‌্যাব-৯ ও গোয়েন্দাবাহিনীর সহযোগীতা চেয়েছেন। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে একটি অপহরণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তার ধারনা, সামাজিকভাবে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করতে এবং ইমা যাতে আয়ারল্যান্ড যেতে না পারে সেজন্য তাকে কেউ অপহরণ করতে পারে।

Manual3 Ad Code

 

এদিকে ইমা যে বাসায় থেকে আইইএলটিএস কোর্স করছিলেন, তার বড়বোনের ননদ বেদেনা বেগম জানান, ইমা অনেক আশা নিয়ে লেখাপড়া করছিলেন। স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথেও তার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আয়ার‌ল্যান্ডে স্বামীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল তার। বেদেনা বেগমেরও সন্দেহ, তাকে কেউ অপহরণ করতে পারে।

 

এদিকে আব্দুস শুকুরের দায়েরকৃত জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার এসআই আশীষ লাল দত্ত জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তারা তদন্ত করছেন। তবে এখনো কোন ক্লু পাননি।

শেয়ার করুন