Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জের শামীমসহ পালিয়ে যাওয়া দুই ‘জঙ্গি’ দেশেই আছেন!

admin

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সুনামগঞ্জের শামীমসহ পালিয়ে যাওয়া দুই ‘জঙ্গি’ দেশেই আছেন!

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া সুনামগঞ্জের শামীমসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি নেতা দেশেই অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান।

শনিবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। খবর সমকাল’র।

Manual6 Ad Code

অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, ছয় মাসের পরিকল্পনায় ঢাকার আদালত থেকে গত ২০ নভেম্বর দুই জঙ্গি নেতা আবু ছিদ্দিক সোহেল ও মইনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। এই জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন সোহেলের স্ত্রী ফাতিমা তাসনিম ওরফে শিখা। জঙ্গি নেতাদের ছিনিয়ে নেওয়ার আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসায় কয়েক দফা বৈঠক হয়। জঙ্গি নেতা মশিউর রহমান ওরফে আয়মানের নেতৃত্বে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।

আনসার আল ইসলামের শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের নির্দেশে পুলিশের ওপর হামলা করে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার তথ্য জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আনসার আল ইসলামের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবু ইমরান ওরফে ওসমান। সেদিন দুই জঙ্গি নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর প্রথমে তাঁরা যান সদরঘাটের দিকে। হামলার দিন ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করেন জঙ্গি নেতা আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী ফাতেমা ও জঙ্গি নেতা মশিউর। জঙ্গি নেতাদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছিলেন ১০ থেকে ১২ জন।

Manual5 Ad Code

ওই দুই জঙ্গি নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ঢাকার আদালতপাড়া থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য তাদের সহযোগীদের সহায়তায় পুলিশের চেখে স্প্রে ছিটিয়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। দুই জঙ্গির নাম মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। এ সময় আনসারের দুই সদস্য ও কয়েকজন পথচারী আহত হয়েন। তাদের ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। দেশের সবকটি বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হয়।

এদিকে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরতে পুলিশ সদর দপ্তর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। তা ছাড়া ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেন ডিএমপি কমিশনার। কারোর দায়িত্ব পালনে অবহেলা থাকলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এসময় জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার দিন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার আসামি হাজিরা দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন একজন পুলিশ ও একজন আনসার সদস্য। গেটের সামনে আসার পরপরই জঙ্গিরা পুলিশ ও আনসার সদস্যকে কিল-ঘুসি মারতে শুরু করে। বাইরে আরও চার জঙ্গি বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘুসি দেওয়ায় পুলিশ সদস্য আহত হন। ফলে তার হাতে থাকা দুই আসামি ছেড়ে দেন তিনি। আনসার সদস্য তার হাতে থাকা অন্য দুই জঙ্গিকে ছাড়েননি। তাকে অনেক মারধর করা হয়েছে। জঙ্গিরা পরে স্প্রে মেরেছে প্রচুর। কিন্তু আনসার সদস্য দুই জঙ্গিকে ছাড়েননি। পুলিশ সদস্য যে দুই আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন তারা বাইরে রাখা মোটরসাইকেলে উঠে চলে যায়। এ সময় গেটের দারোয়ান, পার্কিংয়ে তিনজন ড্রাইভার, কয়েকজন পথচারীর চোখে স্প্রে ছিটায়। বাকি পথচারীরা সরে যান। বাইরে দাঁড়ানো জঙ্গিদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ওই সময় সাংবাদিকদের জানান, একটি মামলায় শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে জঙ্গি শামীম ও সোহেলকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা। দুটি মোটরসাইকেলে করে তারা রায়সাহেব বাজার মোড়ের দিকে পালিয়ে যায়। আশা করি দুই জঙ্গিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। ঘটনার পরপর ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ডিবির প্রতিটি টিম কাজ করছে। জঙ্গি শামীমের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর এলাকায়। সাকিবের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামে। তারা একাধিক মামলার আসামি।

Manual1 Ad Code

এর আগে গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় আট আসামির মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান ওই আদেশ দিয়েছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবের নাম রয়েছে। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা।

Manual3 Ad Code

 

শেয়ার করুন