হাসিনার পরিণতি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের

Daily Ajker Sylhet

admin

২২ আগ ২০২৪, ০২:৩৯ অপরাহ্ণ


হাসিনার পরিণতি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন প্রবল দোর্দণ্ড প্রতাপশালী শাসক শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার এই পতন অনেককেই নতুন বার্তা দিচ্ছে। আর এখান থেকেই শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের এমন দাবি তুলে একটি প্রতিবেদন করেছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন।

গত ১৮ই আগস্ট ডন তাদের পত্রিকার শিরোনাম করেছে ‘নেইবারস: হাসিনা’স লেসন ফর নিউদিল্লি’ শিরোনামে। যেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে ভারত যেন শিক্ষা নেয়। ডনের এমন প্রতিবেদনের কারণ, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাদের একটা অংশ মনে করেন আগামী ২০২৯ সালের পরও নরেন্দ্র মোদির হাতেই থাকবে ভারতের রাষ্ট্র ক্ষমতা।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কদিন আগেই বলেছেন, বিরোধী দল বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টায় ব্যস্ত। তাদেরকে স্পষ্ট করে দিতে চাই, ২০২৯ সালের পরেও মোদিই আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। তার এমন বক্তব্যের পরই ভারতের ক্ষমতার ভবিষ্যদ্বাণী করাদের হাসিনার পতন দেখে শিক্ষা নিতে বলছে পাকিস্তান।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে কয়েক মাস আগে দেশটিতে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে যারা সাংসদ হয়েছেন তাদের এই বার্তা দেয়া যে, নির্বাচনে ভোটাররা মোদির শাসনের বিরুদ্ধে যে তিরস্কার করেছে তা খুব বেশি গুরুত্বের সাথে নেয়ার কিছু নেই। যেহেতু ভারতের পার্লামেন্টে এখন একটি উদ্দীপ্ত বিরোধী দল রয়েছে তাই মোদির দল বেশ উদ্বিগ্ন।

কেননা আগের মতো এবার বিচার বিভাগ এবং আমলাতন্ত্রের অনেকেই মোদির প্রতিহিংসামূলক এজেন্ডা বাস্তবায়নে উৎসাহী নাও হতে পারে। মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যেও অবাধ্যতার গুঞ্জন রয়েছে যা জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

শেখ হাসিনাও মোদির মতো এ বছরের শুরুতে একক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসেছিলেন। সেই নির্বাচনে বিশ্বাসযোগ্যতার বড়ই অভাব ছিল। নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল ছিল না। বিরোধীরা হাসিনার অধীনে নির্বাচন বর্জন করেছিল। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের কোনো লক্ষণ ছিল না হাসিনার নির্বাচনে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন মোদিও নির্বাচন কমিশনের উপর প্রভাব বিস্তার করে ক্ষমতায় এসেছেন। বিজেপি চেয়েছিল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে দূরে থাকুক। এছাড়া বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই বিভিন্ন মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিল মোদি প্রশাসন। কিন্তু ঢাকায় কিছুদিন আগে যা ঘটে গেল তা থেকে মোদি এবং তার দলকে শিক্ষা নেয়া উচিত।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনা সরকারের বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছেন, হাসিনা সরকার ছিল একটি মিথ্যা তৈরির কারখানা। একের পর এক মিথ্যা বলে নিজেদের মত প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন হাসিনা। যা প্রতিটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পলিসি।

একই ধরণের পলিসি মোদি সরকারের তথ্য ও পরিসংখ্যানের দৃষ্টিভঙ্গিতে স্পষ্ট হয়েছে। তবে এমন আচরণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের পরিপন্থী। এতে গণতান্ত্রিক স্বাস্থ্যও খারিজ হয়ে যায়। যার মাধ্যমে প্রবল অস্থিরতা তৈরি হয়। মোদি সরকার এখন ডিজিটাল পাল্টফর্মে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিগত দশ বছরে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে যে জাতীয় শাসনের সমস্যা এবং জটিলতা নিরসনে মোদি সরকার ব্যর্থ। মোদির গত দশ বছরের শাসনের পর সমাজে অন্যায় এবং বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে। দেশে অগণতান্ত্রিক ধারা সৃষ্টি হয়েছে। অমিত শাহ যাই বলেন না কেন তাদের বাংলাদেশের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। কেননা বাংলাদেশে স্পষ্ট হয়েছে যে, কুক্ষিগত ক্ষমতা কিভাবে গণতন্ত্রের কাছে ফিরিয়ে আনতে হয়।

Sharing is caring!