ভাবির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিলেন দেবর, চার দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যু

Daily Ajker Sylhet

admin

২২ মার্চ ২০২৩, ০৮:৪৩ অপরাহ্ণ


ভাবির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিলেন দেবর, চার দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় মাদকদ্রব্য সেবনের কথা পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়ায় এক দেবর তাঁর ভাবির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছেন। লতিফা বেগম (৪২) নামের ওই নারী চার দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ওই নারীর অভিযুক্ত দেবরের নাম মো. জালাল (৩৪)।

নিহত লতিফা বেগম উপজেলার রসুলুল্লাহবাদ ইউনিয়নের উত্তর দাররা গ্রামের মো. জাকারিয়ার স্ত্রী এবং একই উপজেলার কালঘড়া গ্রামের হেলাল সরকারের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহত নারীর বাবা হেলাল বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বুধবার বিকেল চারটার দিকে বলেন, ‘দুপুরে আগুনে দগ্ধ ওই গৃহবধূর মৃত্যুসংবাদ পেয়েছি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই নারীর দেবরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

ওই নারীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে উত্তর দাররা গ্রামের জিন্নাত আলী ব্যাপারীর ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী জাকারিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় লতিফার। এ দম্পতির দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বড় ছেলে প্রবাসী, ছোট ছেলে এবার এইচএসসি পাস করেছে। দেড় বছর আগে জাকারিয়া একেবারে দেশে চলে আসেন। লতিফার চারজন দেবর রয়েছেন। এর মধ্যে দেবর জালাল (৩৪) চার-পাঁচ বছর ধরে মাদকাসক্ত।পরিবারের লোকজন বিভিন্ন পুনর্বাসনকেন্দ্র থেকে তাঁর চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু সুস্থ হননি। নেশার টাকার জন্য নিজের স্ত্রী, বোন ও ভাবি লতিফাকে একাধিকবার মারধর করেছেন জালাল।

নিহত নারীর স্বজনেরা জানান, কয়েক দিন আগে লতিফা দেবরের নেশার বিষয়ে পরিবারের অন্যদের কাছে নালিশ করেন। এতে জালাল ক্ষুব্ধ হন। গত রোববার দুপুরে এক প্রতিবেশীর ঘরে বসে পিঠা তৈরি করছিলেন লতিফা। এ সময় দেবর জালাল পেছন দিক থেকে এসে লতিফাকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে তাঁর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দগ্ধ হন লতিফা।

দগ্ধ হওয়ার পর লতিফাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখে তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। পরিবারের লোকজন রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। অবস্থার আরও অবনতি হলে রাতেই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে লতিফা বেগমের স্বামী জাকারিয়া বলেন, ‘আমার ভাই উন্মাদ ও পাগল। তিন বছর ধরে নেশা করছে। সে আগেও তার স্ত্রী, আমার বোন ও আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। রোববার সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার সময় আমি জমিতে ঘাস কাটছিলাম। ঘটনা শুনে দ্রুত বাড়িতে যাই। সেখানে স্ত্রীকে কাতরাতে দেখি। আমার ভাই তখন পাশেই দাঁড়িয়েছিল। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গ্রামের একটি হাসপাতালে ও পরে ঢাকায় নিয়ে আসি।’

 

Sharing is caring!