সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির দু:সময়

Daily Ajker Sylhet

admin

০৩ সেপ্টে ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ণ


সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির দু:সময়

স্টাফ রিপোর্টার:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে পতন ঘটেছে শেখ হাসিনা সরকারের। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন টানা ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা। ৫ আগস্টের পর গা ঢাকা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সকলস্তরের নেতাকর্মী। অথচ ক্ষমতা হারানোর একদিন আগেও দুর্দণ্ড প্রতাপ ছিল দলটির।

বিশেষ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাপটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন অসহায়। হল থেকে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষাঙ্গনে শান্তিশৃঙ্খলা ও পড়ালেখার পরিবেশ বজায় রাখতে সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠেছে।

ইতোমধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ছাত্ররাজনীতি। একই দাবিতে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও উঠেছে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের আওয়াজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে এই দাবিতে।

জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনেই ক্যাম্পাসে চলতো বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম। বিশেষ করে গত ১৫ বছর ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছিলেন বেপরোয়া। কলেজ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা চড়াও হতো সাধারণ শিক্ষার্থী ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের উপর।

৫ আগস্টের পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের ফের দাবি ওঠে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২৯ আগস্ট ওসমানী মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই ৩১ আগস্ট কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের আলোকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধপূর্বক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

৫ আগস্টের পর যখন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ওঠে তখন ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, ‘১৯৯৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে ছাত্ররাজনীতিসহ সব ধরণের রাজনীতি বন্ধ রয়েছে। তবে বিগত সময়ে একটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন সক্রিয় ছিলো। তবে এসব আর হতে দেওয়া হবে না।’

এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা চার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এর মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লেজুড়ভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসেও দলীয় লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ, সরকারি কলেজ ও মদনমোহন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধেও দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

Sharing is caring!