এসআই পরিচয়ে প্রেম, পরে পাত্রী দেখতে গিয়ে ধরা
১২ মার্চ ২০২৩, ০১:২৮ অপরাহ্ণ
নওগাঁ প্রতিনিধি:
রংপুরের সোহেল রানা (২৪) নিজেকে পুলিশের ভুয়া উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে এক কলেজছাত্রীর (১৮) সঙ্গে প্রেম করছিলেন। টানা এক বছর ধরে মুঠোফোনে যোগাযোগ চালিয়ে যান দুজন। গতকাল শনিবার বিকেলে সেই মেয়েকে পাত্রী হিসেবে দেখতে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার একটি গ্রামে আসেন সোহেল রানা।
মেয়েটিকে দেখার একপর্যায়ে সোহেলের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে পরিচিত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করেন মেয়েটির বাবা। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পর সোহেল যে একজন ভুয়া এসআই, তা নিশ্চিত হন মেয়েটির পরিবারের লোকজন। পরে পত্নীতলা থানার পুলিশ এসে সোহেলকে আটক করে। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে সোহেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। সেই মামলায় সোহেলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সোহেল রানার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, সোহেল রানা পুলিশের ভুয়া পরিচয় দিয়ে পত্নীতলা উপজেলার কলেজপড়ুয়া এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছিলেন। ঢাকা পুলিশ সদর দপ্তরে এসআই হিসেবে কর্মরত বলে পাত্রী হিসেবে মেয়েটিকে দেখতে যান। এমনকি উপপরিদর্শকের ব্যাজ পরিহিত ছবি দিয়ে তিনি ভুয়া একটি পরিচয়পত্রও তৈরি করেছেন। ব্যাজ ও ইউনিফর্ম ছাড়া তাঁর কাছ থেকে পুলিশের ব্যবহৃত বেল্ট ও জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পুলিশ পরিচয় দিয়ে এর আগে তিনি একাধিক মানুষকে প্রতারিত করেছেন। গ্রেপ্তারের পর আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী ও মেয়েটির বাবা বলেন, ‘সোহেল আমার মেয়েকে দেখতে এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে আসেন। নিজের মা–বাবা কিংবা কোনো নিকট আত্মীয়কে সঙ্গে না আনায় তাঁকে আমার প্রতারক বলে সন্দেহ হয়। কৌশলে বাড়িতে রেখে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে সময় কাটানোর ফাঁকে আমার এক পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করে সোহেলের বিষয়ে খোঁজখবর নিই। খোঁজখবর নিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সোহেল রানা একজন ভুয়া পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য তিনি থানা-পুলিশকে খবর দিতে বলেন। তাঁর পরামর্শে সঙ্গে সঙ্গে পত্নীতলা থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে সোহেল রানা একজন পোশাক কারখানার কর্মী। সচেতন না হলে আমার মেয়ের অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যেত।’