“সৈয়দ ইব্রাহীম ও সমশের মবিন চৌধুরী রাজনৈতিক অপমৃত্যুর সলিল সমাধি হয়ে গেল”

Daily Ajker Sylhet

admin

২৬ নভে ২০২৩, ০৬:১১ অপরাহ্ণ


“সৈয়দ ইব্রাহীম ও সমশের মবিন চৌধুরী রাজনৈতিক অপমৃত্যুর সলিল সমাধি হয়ে গেল”

এডভোকের্ট মো: আমান উদ্দিন:
উভয়ই প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ছিলেন। রাষ্ট্রের টাকায় লাইসেন্সধারী বন্ধুক ও গুলি বহন করতেন সৈয়দ ইব্রাহীম। রাষ্ট্রের আদেশে গুলি চালাতেন। রাষ্ট্র তাহার বিনিময়ে আর্থিক সহযোগীতা করিত। গৃহকর্মীর মত রাষ্ট্রের আদেশ নিষেধ পালন করাই ছিল তাহার মূখ্য কাজ। হঠাৎ বিবেক জাগ্রত হল। গৃহকর্মী থেকে অবসরে গিয়ে চিন্তা করলেন গুলামী করে শুধু অর্থ পেলাম। জনগনের ভালবাসা ও সম্মান পেতে হলে, কল্যাণের উপহাস নিয়ে গঠন করলেন “কল্যান পার্টি”। গনঅধিকার সংগঠনের শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা তাহার বিভিন্ন কথাবার্তায় বিশ্বাস করে তাকে সভা সমাবেশে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি করেছেন সরল বিশ্বাসে।
কিন্তু হায়! সে তো প্রজাতন্ত্রের গুলাম ছিলো। শেষে পর্যন্ত গনঅধিকার সংগঠনের নেতাকর্মীরা বুঝতে পারলো তাহার গুলামির আচরণ। গৃহকর্মীদের গিলু একটু কম থাকে। বয়স হয়ে গেলে কোন সংস্থা মূল্যায়ন করে না। শুধু তাদেরকে বাসার দারোয়ান হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু ইব্রাহীম সাহেব একটু চতুর। সভায় গিয়ে সরলমনা ছেলে মেয়েদের চুমু দিয়ে সভার মধ্যমনি হওয়ার চষ্টার করিতো। এমন কি বি.এন.পি সংগঠনের প্রাঙ্ঘ রাজনীতিবিদরা তাকে সম্মান করেছেন। যাহা পাওয়ার নুন্যতম যুগ্যতা নেই। জনাব ইব্রাহীম হয়তো চিন্তা করেছেন, পরিচিতি অনেক হয়েছে। এখন পরিচিতিটাকে কাজে লাগানো দরকার।
অন্ততঃ ইতিহাসের খল নায়ক হয়ে মৃত্যু বরণ করলে, আর না হয় কবরে জনগণ জুতা নিক্ষেপ করবে, মির্জাফর গালি দিবে, বেঈমান, বিশ্বাস ঘাতক বলবে। এর চেয়ে বেশি পাওয়ার শখ তার ছিল বলে মনে হয় না। চাকর বেঠা, তার জন্য এ পাপ্তিই যথেষ্ট। মৃত্যুর পর তার কবরে সোনালী পাথর দিয়ে খোদায়ী করে নি¤েœাক্ত ভাবে লিখবেন তাহার নিকটাতœীয়রাঃ এখনে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন জনাব, সৈয়দ ইব্রাহীম, ইতিহাসের খল নায়ক, বিশ্বাসঘাতক, মুনাফিক, প্রতারক, মিজাফর, বেঈমান ইত্যাদি।
আমরা তাহার অভিশপ্ত জীবনের সুবিচার কামনা করিতেছি। তাহার পরিবারের পক্ষে (আমীন)।
এদিকে সমসের মবিন চৌধুরী।পেশায় ছিলেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তৎকালীন ক্ষমতাশীন দলে বি.এন.পি থেকে। মুখোশদারী, বহুরুপি চরিত্রের অধিকারী বি.এন.পি এর শীর্ষ নেত্রীত্বকে তার নমনিয়তা, ভদ্রতা ও চাটুকারিতার কারণে আস্তা অর্জন করে সুযোগ সুবিধা নিতে সক্ষম হয়েছে। প্রবাদ আছে, ‘নিমরা বিলাই হর খাওয়ার জম’। বি.এন.পি এর নেতৃত্বের পা-লেহন করে ‘পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির মুখপাত্র হিসেবে বিভিন্ন দেশের সাথে গুরু দায়ীত্ব দিয়ে ছিলেন, যাহা বি.এন.পির জন্য ভুল ছিলো।
বিশ্বাস ঘাতক, মুনাফিক, মির্জাফর, প্রতারক তকমাকে পছন্দ করে ইতিহাসের খলনায়ক হয়ে বেঁচে থাকতে চান। যেমন: মির্জাফর আলী খান ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে, বাংলা বিহার উড়িশ্যার শেষ নবাব সিরাজ উদ্ধৌলার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন। জনগণ কাউকে বড় ধরনের গালি দেওয়ার ভাষাঃ হৈ…. মির্জাফর, হৈ….. মির্জাফর, ধিকৃতির তকমা লেপন করেছে। হয়ত বুঝে শুনেই এ তকমাকে পছন্দ করে নিয়েছেন জনাব, মুমিন। তাহার নিকটাত্বীয় যদি থাকেন, তাহলে বলতে চাই মৃত্যুর পর যেন এসব বেঈমান, প্রতারক, বিশ্বাস ঘাতক, মির্জাফরকে যেন আধ্যাতিœক রাজধানী খ্যাত সিলেটের পূণ্যভ‚মিতে সলিল সমাধি না করতে। কারণ সিলেটের পূণ্যভ‚মি এসব কুকির্তীমান পুরুষদের এক ইঞ্চি পরিমান জায়গা দিতে প্রস্তুত নহে। যুগে যুগে এসব মির্জাফরদের উত্তাণ হবে। যেমন: মরহুম উকিল আব্দুস সত্তার বি.এন.পি এর মনোনয়নে ছয় বার এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। দলের সাথে শেষ বয়সে বিশ্বাস ঘাতকতা করার জন্য এলাকার লোকজন জানাযায় বেশী সংখ্যক লোক শরিক হয়নি। হাতে গুনা কয়েকজনের উপস্থিতিতে জানাযা সম্পূর্ণ হয়েছে। এটাই নিয়তি!
লেখক, সভাপতি- সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।

Sharing is caring!