Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে তোপের মুখে পড়লেন বাণিজ্যমন্ত্রী

admin

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৩:০০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৩:০০ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে তোপের মুখে পড়লেন বাণিজ্যমন্ত্রী

Manual7 Ad Code

অনলাইন ডেস্ক:
সিন্ডিকেট ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বাণিজ্য সংগঠন (সংশোধন) বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্র এমপিদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

Manual3 Ad Code

কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আদার দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এটা বাড়ার কোনো কারণ ছিল না, এসব জিনিস রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে আসে না।

Manual5 Ad Code

দেশে আলু পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত থাকার পরেও দাম অনেকটা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে মোকাব্বির খান বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালোই বোঝেন। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বহুবার সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করেছিলেন। মানুষ যখন বলতে শুরু করেছিল বাণিজ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেটের হোতা, তখন সত্য কথা বলতে শুরু করলেন। তিনি (বাণিজ্যমন্ত্রী) বলেন সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ। সস্তা আমিষ যেগুলো ছিল তার দাম অনেক বেড়ে গেছে। ২০২১ সালে পাঙাশের দাম ছিল ১১১ টাকা এখন সেটা ২০০-২৫০ টাকা। গরিবদের সুরক্ষার সময় এখন কিন্তু সেটার জন্য অর্থ এ মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে। এ মন্ত্রণালয় মানুষকে কম টাকায় জিনিস দিতে পারে। বাজারে ভারসাম্য সৃষ্টি করতে পারে।

শামীম হায়দার বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে নিতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মানুষের পকেট থেকে আয় করে চলে যায়। মানুষ কষ্ট পায়।

রওশন আরা মান্নান বলেন, শুধু দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। মানুষ হইচই করে। আমরা অস্বস্তিতে পড়ি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বললে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চোখের সামনে চলে আসে। বাচ্চা কোলে নিয়ে মহিলারা টিসিবি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। একটু কম দামের জন্য। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের লাভের জন্য দ্রব্যমূল্যের ক্ষতি করছে। বাণিজ্যমন্ত্রীকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, সিন্ডিকেট যতক্ষণ পর্যন্ত না ভাঙবেন ততক্ষণ পর্যন্ত বাণিজ্যমন্ত্রী বা দেশের প্রধানমন্ত্রীর দোষ দিয়ে লাভ নাই। সিন্ডিকেট না ভাঙলে দ্রব্যমূল্য কমবে না।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, আজকে গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজি, ভারতে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি। আমাদের সীমান্ত দিয়ে আগে গরু আসত, এখন গরুর মাংস আসছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার খবর দেখি কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি ১৬০০-১৮০০ টাকা কেজি। কী কারণে?

Manual4 Ad Code

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের একটা বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যে মন্ত্রী যে কাজ করে, সে মন্ত্রণালয় তাকে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য বলছি দ্রব্যমূল্য না কমলে মানুষ বাঁচবে না। কারণ আয় বাড়েনি, যে শ্রমিকের বেতন ৩০০ টাকা ছিল এখন ৭০০ টাকা দিলেও তাদের পোষায় না। কারণ বাজারে গিয়ে জিনিসপত্র কিনতে পারেন না। তারা ইলিশ মাছ-গরুর মাংস খেতে পারেন না। বেগুন খাবে, সেটাও হয় না। তাই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসা ও রাজনীতিতে সফল ব্যক্তি বলে মন্তব্য করেন ফখরুল ইমাম।

গত বছরের সঙ্গে বর্তমানের দ্রব্যমূল্যের তুলনা চিত্র সংসদে তুলে ধরেন পীর ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, এক বছর আগে চিনির দাম ছিল ৮৮-৯০ টাকা এখন তা ১৩০-১৩৫ টাকা, ডিম ছিল ৪০-৪২ টাকা এখন তা ৪৮-৫২ টাকা, রসুনের দাম বেড়েছে ২২৯ শতাংশ। গরুর মাংস, বয়লার মুরগি, রুই মাছ সবকিছুর দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী কেন সিন্ডিকেট ধরতে পারছে না তা আমরা জানি না।

বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এখানে জিনিসপত্রের দাম ও সিন্ডিকেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে আমি নিজে একজন সিন্ডিকেটের লিডার। আমি ব্যবসায়ী। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই সংসদে আমার অনেকবার বলতে হয়েছে যে, আমি ব্যবসায়ী হওয়ার অনেক আগে থেকেই রাজনীতি করি। আমি রাজনীতি শুরু করার ২০ বছর পরে ব্যবসা শুরু করেছি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিমের ব্যাপারে একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি আজকে। যদি সেই দামে না পাই তাহলে দু-এক দিনের মধ্যে ডিম আমদানি করব। আমরা ভোক্তাদের দিকে লক্ষ্য রাখব।

Manual3 Ad Code

পরে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। নির্ধারিত সময়ে বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাচন যথাসময়ে করা না গেলে অতিরিক্ত ছয় মাস সময় পাওয়া যায়। বিলে সংশোধনী এনে এখন সেটি আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে।

Sharing is caring!

শেয়ার করুন