আসামিরা পলাতক, জট খুলছে না নাসরিনের মৃত্যু রহস্যেরও

Daily Ajker Sylhet

admin

১২ অক্টো ২০২৩, ০৩:৫৭ অপরাহ্ণ


আসামিরা পলাতক, জট খুলছে না নাসরিনের মৃত্যু রহস্যেরও

স্টাফ রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জে সুমাইয়া খাতুন ওরফে নাসরিনের (১৯) মরদেহ উদ্ধারের পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার মূল চার আসামিকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ।

আকাশ নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হলেও নাসরিনের কথিত বন্ধু রোমান ওরফে নোমান ও সহযোগীরা ধরা না পড়ায় রহস্যের জটও খুলছে না।

নিহত নাসরিন সিরাজগঞ্জ শহরের মাছুমপুর মধ্যপশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা বাস শ্রমিক নাসির উদ্দিনের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবর সকালে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার বাবা নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম।

মামলার সূত্রে জানা যায়, সয়দাবাদ পূর্নবাসনের বাসিন্দা মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রোমানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল নাসরিনের। গত ৬ অক্টোবর বিকালে নাসরিনকে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান রোমান।

পরে রাত দেড়টার দিকে রোমান মোবাইল ফোনে নাসরিনের বাবাকে বলেন, ‘নাসরিন পাগলামি করছে এসে আপনি নিয়ে যান’। তখন নাসরিনের বাবা সকালে মেয়েকে আনতে যাবেন বলে জানান।

এরপর ভোরে রোমান আবার ফোন করে জানান- নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে তার চাচাত ভাই আকাশের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন। লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে।

নাসরিনের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, “তাদের মধ্যে সর্ম্পক থাকায় নাসরিনকে রোমানের সঙ্গে যেতে দিয়েছিলাম। কিন্তু নিজের বাড়িতে না নিয়ে সয়দাবাদ পূর্নবাসন এলাকায় সেলিম সেখ ওরফে পটল জামাইয়ের ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে মেয়েকে মারধর করে হত্যা করেছে রোমান।”

তার মেয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণেরও শিকার হতে পারে বলেও অভিযোগ করেন বাস শ্রমিক নাসির। মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরদিন রোমানের বন্ধু আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ জানিয়েছে বাবা-মা ঢাকায় থাকায় সে বাড়িতে একাই ছিল। সেদিন গভীর রাতে মোটর সাইকেলে নাসরিনকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হয় রোমান। সঙ্গে আরও তিন-চার জন বন্ধু ছিল। রাতে তারা সবাই একসঙ্গে ইয়াবা সেবন করেছে। একপর্যায়ে নাসরিনকে নিয়ে রোমান আলাদা একটি কক্ষে ঢুকে পড়ে।”

তিনি বলেন, “ভোরের দিকে আকাশসহ অন্যরা রোমানের কক্ষের ধর্নার সঙ্গে নাসরিনকে ঝুলন্ত দেখতে পায়। পরে সেখান থেকে মোটরসাইকেলের মাঝখানে মৃত নাসরিনকে বসিয়ে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় দুই বন্ধু।”

ওসি আরও বলেন, আসামিরা সবাই সমবয়সী। এলাকায় তারা ছিঁচকে চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে। কয়েকজনের নামে মামলাও আছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে নাসরিনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Sharing is caring!