Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে আজই রাশিয়া যাচ্ছেন শি জিনপিং

admin

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৩ | ০১:১০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ | ০১:১০ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে আজই রাশিয়া যাচ্ছেন শি জিনপিং

Manual3 Ad Code

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সোমবার (২০ মার্চ) এশীয় পরাশক্তি এই দেশটির প্রেসিডেন্ট মস্কোতে পৌঁছাবেন। পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির তিন দিনের মাথায় এই সফর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

Manual4 Ad Code

আর তাই এই সফরের সময় শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনের জন্য আগের চেয়ে আরও মনোযোগী হবেন পুতিন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ায় নির্বাসন নিয়ে শুক্রবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর শি জিনপিংই হবেন প্রথম বিশ্ব নেতা যিনি পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাবেন।

Manual7 Ad Code

রয়টার্স বলছে, চলতি মাসেই তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন শি জিনপিং। আর এরপরই রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া রাশিয়াও জিনপিংয়ের এই সফরকে এমন ভাবে উপস্থাপন করবে যে, মস্কোর একটি শক্তিশালী বন্ধু রয়েছে যে কিনা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত।

গত শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আগামী ২০ থেকে ২২ মার্চ পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কোতে অবস্থান করবেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এসময় আরও জানানো হয়, ‘এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি’ সম্পাদন করা হতে পারে।

Manual7 Ad Code

একইদিন এক টুইটে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, জিনপিংয়ের এ বৈঠকটি হবে ‘বন্ধুত্ব এবং শান্তির জন্য।’

এর আগে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করার অভিযোগে গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। পুতিনের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি বেআইনিভাবে ইউক্রেনের শিশুদের রাশিয়াতে সরিয়ে নিয়েছেন।

আদালত বলছে, এই অপরাধ গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকেই ঘটে চলেছে। একই অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া এলভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও।

মূলত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। আইসিসি যা করতে পারে তা হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তারের পরে তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে বিচারের জন্য হাজির করা।

Manual1 Ad Code

এছাড়া আইসিসি তার বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তিটি রোম সংবিধি নামে পরিচিত। রাশিয়া এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি। তাই পুতিন বা মারিয়া এলভোভা-বেলোভাকে আপাতত এই আদালতের হাতে সমর্পণের কোনও সুযোগ নেই।

রয়টার্স বলছে, চীনা সংবাদপত্রের জন্য লেখা একটি নিবন্ধে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, তিনি তার ‘ভালো পুরোনো বন্ধু’ শি জিনপিংয়ের সফরের জন্য খুবই আশাবাদী। রোববার রাতে ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে এই নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়া ওই নিবন্ধে ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষে মধ্যস্থতা করতে চীনের ইচ্ছাকেও স্বাগত জানিয়েছেন পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যেসব ঘটনা ঘটছে সেটির পটভূমি এবং প্রকৃত কারণগুলো অনুধাবন করে চীন ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। সংকট সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা পালনে চীনের ইচ্ছাকে স্বাগত জানাই আমরা।’

চীন গত মাসে ইউক্রেনে চলমান সংঘাতের নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়ে সংলাপসহ ১২-দফা প্রস্তাব প্রকাশ করে। তবে বছরব্যাপী যুদ্ধ কীভাবে শেষ হতে পারে সে সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব সেখানে নেই।

ইউক্রেন সতর্কতার সাথে চীনা প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে দেশটি বলেছে, যেকোনও ধরনের সমাধানের জন্য রাশিয়াকে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ সমস্ত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল।

উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন।

 

শেয়ার করুন