পিলখানায় হত্যা : নিহত সেনাদের পরিবারের ৭ দাবি

Daily Ajker Sylhet

admin

১৮ আগ ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ


পিলখানায় হত্যা : নিহত সেনাদের পরিবারের ৭ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার:
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করেছেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর হাতে থাকা ট্র্যাজেডির সব তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ, তদন্ত কমিশন গঠন ও ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহিদ সেনা দিবস ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে মহাখালী রাওয়া ক্লাবের স্কাইলাইন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিলখানায় শহিদ ৫৭ অফিসার ও ১৭ সাধারণ নাগরিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিলখানা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া।তিনি বলেন, পিলখানা হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আমি নাটক সাজানোর নামে রহস্যশালা আর চাই না।

রাকিন আহমেদ বলেন, আমরা সেসব দেশপ্রেমিক অফিসারের অবদান ভুলব না। আমরা চাই নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করা হোক। ক্ষতিগ্রস্ত সেনা অফিসারদের পরিবারকে যেন যথাযথ সম্মান ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। আমরা শহিদ পরিবার মনে করি-যেসব নির্দোষ, দেশপ্রেমিক বিডিআর সৈনিক জেল খাটছেন, সুষ্ঠু তদন্তে যেন তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ট্রায়াল বা তদন্তকে আমরা মানি না। কারণ প্রধান যে হত্যাকারী, নির্দেশদাতা তিনি তখন ক্ষমতায় ছিলেন। খুনি কি তার নিজের বিচার করবে?

রাকিন আহমেদ বলেন, এক আওয়ামী লীগ নেতা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, ওনার নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমার বাবা-মাকে জবাই দিয়েছেন। যদি বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহলে বাবা-মার মতো আমাকেও জবাই দিয়ে দেবে।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিকের ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, দুটো তদন্ত কমিটি হয়েছিল। বাহিনীর পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর। যিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমরা খুব করে চাইব অন্তত তার তদন্ত কমিটির রিপোর্টটা পাব। কারণ আমরা খুব কাটছাঁট অংশ গণমাধ্যমে জেনেছি। আমরা পুরোটাই দেখতে চাই।

এর আগে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-১. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সত্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে আগে যেসব তদন্ত হয়েছে, সেসব তদন্তের রিপোর্ট পাবলিক করতে হবে।

২. হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় মোতাবেক তিনজন জজ যে তদন্ত কমিশনের কথা বলেছেন, অবিলম্বে সেই তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। এতে পর্দার আড়ালে রয়ে যাওয়া ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বেরিয়ে আসবে।

৩. অফিসিয়াল গ্যাজেট করে ২৫ ফেব্র“য়ারিকে শহিদ সেনা দিবস হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। গ্যাজেটে শাহাদতবরণকারী সবাইকে শহিদের মর্যাদা দিতে হবে।

৪. ২৫ ফেব্রুয়ারি শহিদ সেনা ও শোক দিবস ঘিরে দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। ৫. পিলখানা ট্র্যাজেডিকে স্কুলের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে, কী ছিল এই শহিদদের ত্যাগ।

৬. যেসব সেনা কর্মকর্তা এ ঘটনাকে ঘিরে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

৭. নির্দোষ কোনো বিডিআর সদস্যকে যেন কোনোভাবেই সাজা না দেওয়া হয়।

Sharing is caring!