Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নষ্ট ইভিএম ব্যবহারের ঝুঁকি নিতে চায় না ইসি

admin

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
নষ্ট ইভিএম ব্যবহারের ঝুঁকি নিতে চায় না ইসি

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
অবশেষে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার থেকে সরে এলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৩০০ সংসদীয় আসনেই ব্যালট পেপার ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ইসির হাতে থাকা ইভিএমগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে। মূলত আর্থিক সংকট, সময় স্বল্পতা, নষ্ট ইভিএম ব্যবহারে ঝুঁকি, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তে এলো নির্বাচন কমিশন।

ইসির সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে তড়িঘড়ি করে তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকায় গৃহীত প্রকল্পের অধীনে দেড়লাখ ইভিএম কেনে ইসি। পরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৬টি আসনে ইভিএম ভোট গ্রহণ করে তৎকালীন নূরুল হুদা কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে সোচ্চার ছিল।

এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক ‘সংলাপের’ পাশাপাশি প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলো কমিশন। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ৯টি দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেয়। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ইসির সংলাপ বর্জন করে ইভিএমের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরে।

পরে গত বছরের ২৩ আগস্ট বর্তমান সিইসি জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। তিনি তখন আরো জানিয়েছিলেন, কমিশনের হাতে বর্তমানে যে দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে, তা দিয়ে বড়জোর ৭০-৮০টি আসনে ভোট গ্রহণ করা যাবে।
ফলে নতুন করে ইভিএম কিনতে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নিয়ে সেটিকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় কমিশন। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়নি।

Manual8 Ad Code

এরপরই নিজেদের কাছে থাকা দেড় লাখ ইভিএমে অর্ধশতাধিক আসনে ভোট করার কথা জানায় কমিশন। ইভিএমের পক্ষে ইতিবাচক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বক্তব্যও দিয়ে আসছিলো কমিশন। কিন্তু ইসির হাতে থাকা অধিকাংশ ইভিএম নষ্ট। মেশিনের ভেতের পানি-কাদা জমে আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সিকিউরড কানেকটিং কেবল ও পাওয়ার কেবল নেই। তাড়াহুড়ো করে কেএম হুদা কমিশন দেড় লাখ ইভিএম কিনলেও সেগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা তারা করেনি। ফলে সেসব ইভিএম সচল করতে চরম বেগ পেতে হয় বর্তমান কমিশনকে।

ইভিএম মেরামতে ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকার প্রস্তাব দেয় ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।

আগামী অর্থ বছরে পাওয়া যেতে পারে বলে নিশ্চয়তা দেয়। এ অবস্থায় ইভিএমগুলো কিউসি (কোয়ালিটি চেকিং) করে কাজ করার মতো অর্থ ইসির হাতে নেই এবং সময় সাপেক্ষ বিষয়।

Manual6 Ad Code

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ‘আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা’-এর এজেন্ডা নিয়ে বৈঠক আহবান করে বর্তমান ইসি। সিইসির সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান, ইসি সচিবসহ ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Manual7 Ad Code

কমিশন সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, সভায় দুইজন নির্বাচন কমিশনার জাতীয় নির্বাচনে কিছু আসনে ইভিএম ব্যবহারের মত দেন। কিন্তু অন্যান্যরা বর্তমান ইসির হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে জাতীয় নির্বাচন করানোর ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা বলেন, যে ইভিএম আছে সেটি দিয়ে ভোট করলে ঝুঁকি তৈরি হবে। পরে সর্বসম্মতভাবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে বিষয়ে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এ মেশিন মেরামতের জন্য যে ১২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল; এ অর্থ প্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হবে।

Manual3 Ad Code

শেয়ার করুন