Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চোখের সামনে পুড়ছে দোকান, তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই

admin

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ | ০২:৫৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ | ০২:৫৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
চোখের সামনে পুড়ছে দোকান, তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে রাজধানীর অন্যতম জনপ্রিয় পোশাকের মার্কেট হলো বঙ্গবাজার। তাদের চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। কালো ধোঁয়ায় চারপাশ আচ্ছন্ন। চোখের নিমেষেই পুড়ছে একের পর এক দোকান। প্রথমে বঙ্গবাজার আদর্শ মার্কেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে পাশের গুলিস্তান সুপার মার্কেট, বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট, মহানগর হকার্স মার্কেট, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট, এনেক্স টাওয়ার, বরিশাল প্লাজা, হোমিও মার্কেটও ইসলামীয়া মার্কেটসহ মোট ৯টি মার্কেটে আগুন লাগে। দোকান মালিক-কর্মচারী, ক্রেতা-বিক্রেতা, স্থানীয়রাসহ প্রশাসন বলছে তারা একসঙ্গে এতো মার্কেট পুড়তে দেখেনি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে একে একে ৪৮টি ইউনিট যোগ হয়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর (এফএসসিডি), ভলেন্টিয়ার, র‌্যাব, সেচ্ছাসেবক, দোকান মালিক-কর্মচারী ও স্থানীরা।

Manual1 Ad Code

আগুন লাগা ও নিয়ত্রণ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণ আসে। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট প্রচেষ্টা চালিয়ে বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পানি সংকট, উৎসুক জনতা ও বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি তবে ফায়ার সার্ভিসের ৫ জনসহ মোট ১৫ জন আহত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ আকারে আমরা ঘোষণা করেছিলাম। এ সংক্রান্ত ব্যানারও টানিয়েছি। এরপর আমরা দশবার নোটিশ দিয়েছি। বলেছি, এই ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের করণীয় যা যা ছিল তা আমরা করেছি। তারপরেও এখানে ব্যবসা চলছিল। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমান তদন্তের পর জানা যাবে।’

ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বললেও ঘটনাস্থলে বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

Manual4 Ad Code

জানা যায়, ‘বঙ্গবাজার এলাকায় অন্তত ৯টি মার্কেটে আগুন লাগে। এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডেকে থাকেন। এখান থেকে রাস্তার উল্টো পাশে বরিশাল প্লাজা, ইসলামীয়া ও বঙ্গো হোমিও মার্কেটেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে বঙ্গবাজার আদর্শ মার্কেট, গুলিস্তান সুপার মার্কেট, বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এই ৪ মার্কেটেই প্রায় ৩ হাজার দোকান ছিল এবং সেখানে কাজ করেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ।’

ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ‘স্বরণকালে এতো বড় আগুন দেখিনি। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪-৫ হাজারের ওপরে দোকান পুড়ে গেছে বলে ধারণা। এর ফলে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন।’

বঙ্গবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জীবনে এত ভয়াবহ আগুন দেখি নাই।এই আগুনে আশেপাশের মোট ৯টি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পরে। শতশত দোকান চোখের সামনে পুড়ছে অথচ তাকিয়ে ছাড়া উপায় ছিল না। বঙ্গ মার্কেটে আমার চাচার একটি দোকান ছিল সেটা পরে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।’

Manual2 Ad Code

এনেক্সকো টাওয়ারে আনিকা ট্রেডার্সের পাইকারি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুধু বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটে দুই টিনশেড মার্কেটে দোকান আছে ৩-৪ হাজার। ওই মার্কেট সম্পর্ণ পুড়ে গেছে। এমন কোনও দোকান নেই যে সেটি পোড়েনি।’

বঙ্গবাজার এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার দোকান পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন।

 

Manual2 Ad Code

শেয়ার করুন