Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন যারা

admin

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৬:৩৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৬:৩৮ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
নতুন মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন যারা

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরঙ্কুশ এই জয়ের ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। আগামীকাল শপথ নেবেন সংসদ সদস্যরা। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা।

আগের চার বারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাই দায়িত্ব নেবেন বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে মন্ত্রিসভায় কারা-কারা স্থান পাচ্ছেন তা নিয়ে নানামুখী আলোচনা আছে।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার ‘ক্লিন ইমেজধারী’ ও অভিজ্ঞ সদস্যরা নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন। আর নতুন করে যুক্ত হবেন দলের সিনিয়র ও ত্যাগী নেতারা।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।

Manual1 Ad Code

অন্যদিকে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম নতুন মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন।

Manual5 Ad Code

টেকনোক্র্যাট কোটায় আবারও মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। জামালপুর-৫ (সদর) আসনের এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং নড়াইল-২ আসনের এমপি ও ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মুতর্জাকেও মন্ত্রী বানাতে পারেন শেখ হাসিনা।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক জ্ঞানী মানুষ। দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা উনার ঠিক করা আছে। এটা উনি জানেন, কোথায় কাকে কখন নেওয়া দরকার।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, দলটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের অন্যতম সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাতও মন্ত্রী হওয়ার আলোচনায় আছেন।

এবারের মন্ত্রিসভা কেমন হতে পারে, জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক জ্ঞানী মানুষ। দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা উনার ঠিক করা আছে। এটা উনি জানেন, কোথায় কাকে কখন নেওয়া দরকার। এটা প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঠিক করেন। সারা পৃথিবীতেও এটিই নিয়ম।

আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, মন্ত্রিসভায় কারা-কারা থাকবেন, তা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। উনি অনেক বুঝে-শুনেই সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রেও তাই হবে।

যেভাবে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভা
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গেজেট জারির পর তাদের শপথ পড়ানো হবে। এরপর সংসদ সদস্যরা বৈঠক করে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করবেন। রাষ্ট্রপতি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানো হবে। এরপর নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আর এর মধ্য দিয়েই নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হবে।

মন্ত্রিসভা গঠন প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, যিনি সংসদ সদস্য, সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন, সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনের এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। সংসদ সদস্যদের শপথ হওয়ার পর সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করতে হবে। সেটি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হবেন। তিনি নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে জানাতে হয় সরকার গঠনের জন্য। এরপর তিনি যখন অনুমোদন দেন, তখন সরকার গঠন করা হয়।

Manual8 Ad Code

কেমন ছিল আগের টানা ৩ মেয়াদের মন্ত্রিসভা?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সেই নির্বাচনে ২৬৩টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা, গঠন করেন ৩২ সদস্যের মন্ত্রিসভা। এর ১৮ দিন পর মন্ত্রিসভায় যুক্ত হন আরও ছয়জন। এরও দুই বছর ১০ মাস পর আরও দুই জনকে মন্ত্রী করা হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মোট ১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। সেবার নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও এর নেতৃত্বাধীন জোট। ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় আওয়ামী লীগ ও এর শরিক দলগুলো।
মন্ত্রিসভা গঠনের এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। সংসদ সদস্যদের শপথ হওয়ার পর সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করতে হবে। সেটি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হবেন:

ওই বছরের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। তখন অধিকাংশ পুরোনো মন্ত্রী বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন ও আগের সরকারের সময় দলের বাদ পড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হয়।

সেই মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুইজন উপমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিসভার আকার আরও বাড়ানো হয়।

Manual6 Ad Code

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে, এ নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি আসন। এছাড়া, তিনটি আসন পায় অন্যরা।

২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার আকার হয় ৪৭ জনের। এর মধ্যে নতুন মুখ ছিলেন ৩১ জন। পাশাপাশি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অনেকেও এই মন্ত্রিসভায় স্থান পান।

শেয়ার করুন