বিয়ানীবাজারের পিতৃনিবাসে শহীদ মনু মিয়া দিবস পালিত

Daily Ajker Sylhet

admin

০৭ জুন ২০২৩, ০৫:৩৬ অপরাহ্ণ


বিয়ানীবাজারের পিতৃনিবাসে শহীদ মনু মিয়া দিবস পালিত

স্টাফ রিপোর্টার:
৬ দফা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মনু মিয়ার পৈত্রিক বাড়ি বিয়ানীবাজারে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। মনু মিয়া স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষ্যে পৌরশহরের নয়াগ্রামে তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত স্মৃতিফলকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে এবং মনু মিয়া স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য সচিব খালেদ জাফরীর সঞ্চালনায় বিয়ানীবাজার পৌরসভা, উপজেলা আওয়ামীলীগ, প্রেসক্লাব, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিসহ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

 

ফখরুদ দৌলা মনু মিয়া বা শহীদ মনু মিয়া ছিলেন ছয় দফা আন্দোলনের প্রথম শহীদ । তিনি ১৯৬৬ সনের ৭ই জুন ছয় দফা আন্দোলনে শহীদ হন। শহীদ মনু মিয়ার জন্ম সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার বড়দেশ তথা বর্তমান নয়াগ্রামে। পিতা মনহুর আলী খানের ৬ পুত্র ও ৩ কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।

 

শহীদ মনু মিয়া পারিবারিক সমস্যার কারণে প্রাথমিকের বেশি লেখাপড়া করতে পারেননি। ২০-২২ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতে গৃহস্থালি কাজ করেন। অতঃপর জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি দেন। গাড়ি চালানো শিখে চাকরি নেন এক কোমল পানীয়ের কোম্পানিতে।

জানা যায়, ১৯৬৬ সালের ৭ই জুন সকাল ১১টার দিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার শ্রমিক কর্মচারীরা মিছিল নিয়ে রাজপথে বের হয়। তারা তেজগাঁও রেলস্টেশনের আউটার সিগনালের কাছে অবস্থান নিয়ে রেললাইন অবরোধ করে। পুলিশরা তাদেরকে দমানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে একপর্যায়ে প্রতিবাদকারী শ্রমিক-জনতার ওপর গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন ৩০ বছর বয়সী শ্রমিক মনু মিয়া। ছয় দফা আন্দোলনের প্রথম শহীদ ছিলেন তিনি। মনু মিয়ার লাশ নিয়ে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকরা বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারা দেশ। এভাবে সাধারণ জনতার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরো বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে বাঙালির স্বাধীকার চেতনা প্রবল হয় এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের মতো একটি আন্দোলনের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।

 

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার শহীদ মনু মিয়ার স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও নাখালপাড়ায় তার নামে ‘মনু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে শহীদ মনু মিয়ার স্মৃতিচিহ্ন রক্ষার্থে বিয়ানীবাজারের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের অর্থায়নে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে।

 

Sharing is caring!