শ্বশুর-স্ত্রী মিলে যুবককে মারধর, কেঁচি দিয়ে তার গলায় জখম

Daily Ajker Sylhet

admin

১৫ এপ্রি ২০২৩, ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ


শ্বশুর-স্ত্রী মিলে যুবককে মারধর, কেঁচি দিয়ে তার গলায় জখম

তুরাগ প্রতিনিধি :
রাজধানীর তুরাগে স্ত্রীর ‘পরকীয়ায়’ বাঁধা দেওয়ায় মারধরের শিকার হয়েছেন নাদিম মাহমুদ নামের এক যুবক। বৃহস্পতিবার রাতে তুরাগের চন্ডালভোগ এলাকার চানভিলা নামক একটি বাসায় শ্বশুর ও স্ত্রী মিলে নাদিমকে মারধর ধারালো কেঁচি দিয়ে তার গলায় জখম করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তুরাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে নাদিম।

ভুক্তভোগী নাদিমের অভিযোগ, সন্ধ্যায় ইফতারের পর স্ত্রীকে ফোনে কথা বলতে দেখি। পরে মুক্তার মোবাইলের কললিস্টে গিয়ে দেখতে পাই একটি বিদেশি নাম্বার। ওই নাম্বারে কল দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে, সৌদি প্রবাসী এক ব্যক্তি নিজেকে আমার স্ত্রীর প্রেমিক দাবি করেন। এ ব্যাপারে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে সে ক্ষিপ্ত হয়।

নাদিম জানায়, প্রবাসী ওই ব্যক্তি ফোনে আমাকে বলে আমার স্ত্রী নিজেকে ডিভোর্সি পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছিল। অথচ, আমি মুক্তার স্বামী বিষয়টি ওই প্রবাসীকে জানালে তিনি মুক্তাকে ইমু, ফেসবুক থেকে ব্লক করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তা তার বাবা-মাকে খবর দিয়ে বাসায় ডেকে আনে।

তিনি বলেন, মুক্তার বাবা হীরা হাওলাদার রুমে ঢুকেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার শ্বশুর ঘরে থাকা একটি কেঁচি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলায় আঘাত করতে থাকেন। এ সময় জীবন বাঁচাতে আমি ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা তুরাগ থানার এসআই এসএম মানিক মাহমুদ জানান, ওখানে মারামারির ঘটনা শুনেছি। বেশি রাত হয়ে যাওয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাদীদেরকে পাইনি। তবে শুনেছি ভিকটিমকে ওই মেয়ে তালাক দিয়েছিল। তালাক দেওয়া স্ত্রীর কাছে যাওয়ায় মেয়ের বাবার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ভিকটিম আইনগতভাবে যতটা সেবা পাওয়ার ততটাই আমাদের কাছ থেকে পাবে।

এদিকে তালাকের বিষয়ে ভুক্তভোগী নাদিম মাহমুদ জানায়, আমার মাকে না জানিয়ে গ্রাম থেকে স্ত্রী মুক্তা ঢাকায় চলে আসায় ওর সাথে আমার মনোমালিন্য চলছিল। গত দুই মাস ধরে স্বাভাবিকভাবেই আমরা সংসার করে আসছি। বাসায়-আসা যাওয়া করছি, সংসারের ভরণ-পোষণ দিচ্ছি। তালাকের বিষয় কখনোই আমাকে জানানো হয়নি।

জানা যায়, ১১ বছর আগে প্রেমের সূত্র ধরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে নাদিম মাহমুদ ও মুক্তা আক্তার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে মাহিম নামের আট বছরের এক শিশুপুত্র রয়েছে।

ভুক্তভোগী নাদিম মাহমুদ বলেন, স্ত্রী মুক্তা অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে প্রবাসীদের ইনবক্সে নিজের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পাঠিয়ে তাদের সঙ্গে প্রেমের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব নিয়ে প্রায়ই স্ত্রী মুক্তার সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডা হতো। এ নিয়ে চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় আকবর শাহ থানাতেও ২০১৮ সালে জিডি করেছি। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওর বাবাকে ডেকে এনে আমাকে মারধর করানো হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

Sharing is caring!