Beanibazarer Alo

  সিলেট     বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচনের ১ম ধাপ:- চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি বিএনপি

admin

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২:৫৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২:৫৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
উপজেলা নির্বাচনের ১ম ধাপ:- চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি বিএনপি

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেও দলীয় অবস্থানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিএনপি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও দলের অবস্থান কী হবে-এ বিষয়ে এখনো অস্পষ্টতায় দলটির নেতাকর্মীরা। অর্থাৎ স্বতন্ত্রভাবে দলের কেউ নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, নাকি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নেবে তা নিয়ে কেন্দ্রের কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা পায়নি তৃণমূল। যে কারণে তারা অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যেহেতু দল নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, সেহেতু পূর্বের সিদ্ধান্তই এখনো বলবৎ আছে।’

Manual7 Ad Code

চার ধাপে সাড়ে ৪শর বেশি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল সোমবার। জানা গেছে, দলের সিদ্ধান্ত না মেনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি স্থায়ী কমিটি। তবে গত মার্চের শুরুতে ঢাকা বিভাগীয় জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল নেতাদের মতামত জানতে চায় হাইকমান্ড। ওই বৈঠকে তৃণমূল নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এ সময় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে দলের কেউ অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Manual7 Ad Code

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল। এ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে পরবর্তীতে জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যদি কেউ দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সূত্রমতে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ইস্যুতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একাংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, যেহেতু এখন কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম নেই, সে কারণে নেতাকর্মীদের সক্রিয় এবং ঐক্যবদ্ধ রাখতে কৌশলে হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। তা ছাড়া নেতাকর্মীদের একটি অংশকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা কঠিন হবে। অপরাংশের নেতাদের মতামত হচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানে, এই সরকারকে বৈধতা দেওয়া। একই সঙ্গে গত ৭ জানুয়ারি বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও চায় বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সরকারের এ ফাঁদে কোনো অবস্থায় পা দেওয়া ঠিক হবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, ঈদের আগে উপজেলা নির্বাচন ইস্যুতে দলের অবস্থান বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থায়ী কমিটির বৈঠক না হওয়ায় এ ইস্যুতে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কোনো কোনো নেতা মনে করেন, নীতিনির্ধারণী ফোরাম বিভক্ত থাকায় কৌশলগত কারনেই ঈদের আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠক আহ্বান করা হয়নি। স্থায়ী কমিটির একজন নেতা জানান, সোমবার রাত ১০টায় এই বৈঠক শুরু হয়ে অনেক রাত পর্যন্ত চলে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

Manual5 Ad Code

দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কতজন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্তদের।

সিদ্ধান্ত বদল, নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত
এদিকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি এখন উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃনমুলকে জানানো হয়, যাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে, শুধু তাদেরকেই প্রার্থী করার। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে আর্থিক সাপোর্ট দেওয়া হবে না। কিন্তু সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর সর্বশেষ কেন্দ্রীয় পর্যালোচনা সভায় কোনো ফর্মেটেই দলীয় পদ-পদবিধারী নেতাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নানা দিক বিচার – বিশ্লেষণ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

Manual3 Ad Code

সূত্র মতে, সোমবার প্রথম ধাপের নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল। এই দিনে নতুন করে জামায়াতের কোনো নেতা প্রার্থী হননি। আগে যারা মনোনয়ন (অনলাইনে) দাখিল করে ফেলেছেন তারা যথানিয়মে যথা সময়ে তা প্রত্যাহার করে নিবেন। আপাতত ভোটের কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডে না থেকে সংগঠনের রুটিন কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জামায়াত নেতারা।

শেয়ার করুন