Beanibazarer Alo

  সিলেট     শুক্রবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়ানীবাজারে মসজিদভিত্তিক শিক্ষা: প্রকল্প আছে, শিক্ষার্থী নেই

admin

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৫:৪৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৫:৪৫ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
বিয়ানীবাজারে মসজিদভিত্তিক শিক্ষা: প্রকল্প আছে, শিক্ষার্থী নেই

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ানীবাজারে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র ১৪০টি। কিন্তু এর বেশির ভাগই মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে দু-একটি কেন্দ্রে হাতে গোনা শিক্ষার্থী ছাড়া বেশির ভাগ কেন্দ্রই শিক্ষক-শিক্ষার্থীশূন্য। তবু নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষায় শিশুদের অনুপ্রাণিত করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে এই প্রকল্প।

স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, বিয়ানীবাজারে বর্তমানে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের ৩১টি শাখা বন্ধ রয়েছে। ইমাম সাহেবের বদলীসহ নানাকারনে এই কেন্দ্রগুলো বন্ধ বলে জানা গেছে। সরজমিন মসজিদসংলগ্ন প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রের অনেক শাখা পরিদর্শনে গেলে খাতার শিক্ষার্থী আর বাস্তব শিক্ষার্থীর মধ্যে বিস্তর ফাঁরাক দেখা যায়। বেশীরভাগ কেন্দ্রে কালো বোর্ড ঝুলানো দেখা গেলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে দেখা যায়নি।

Manual4 Ad Code

জানা যায়, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের কার্যক্রম চলার কথা। কিন্তু সরজমিন পরিদর্শনকালে সকাল সাড়ে ৭টায়ও একাধিক কেন্দ্রে হাতেগোনা শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ করার শর্তে কেন্দ্রের এক শিক্ষক জানান, কয়েকজন শিক্ষার্থী ঠান্ডা-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে। তাই তারা কেন্দ্রে পড়তে আসতে পারবেনা বলে আগে জানিয়েছে। অন্যদিকে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় অন্তত: ১৫টি মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র। যা স্থানীয় কর্মকর্তাদের বন্ধ তালিকার বাইরে।

Manual4 Ad Code

সূত্র জানায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তালিকাভূক্ত বেশীরভাগ শিক্ষক বিভিন্ন মাদ্রাসায় চাকরী করেন। তারা যথাসময়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকতে হয় বিধায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেন।

Manual2 Ad Code

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিয়ানীবাজারের সহকারি সুপার ভাইজার আব্দুর রহমান জানান, অনেক মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রে নির্ধারিত শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়না বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। তবে শিশুদের অনুপস্থিতির নানা কারণ থাকায় আমরা অনেকসময় বিষয়টি এড়িয়ে যাই। প্রতিটি কেন্দ্রের একজন করে শিক্ষককে সরকার মাসিক ৫ হাজার টাকা সম্মানী দিয়ে থাকেন। তার পরও কেন্দ্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী না থাকাসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পৌরশহরের খাসা গ্রামের একটি প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তালিকাভূক্ত শিক্ষকের পরিবর্তে অন্য আরেকজন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবর্তিত শিক্ষক বলেন, এই কেন্দ্রের শিক্ষকের কোনো সমস্যা হলে মাঝেমধ্যে তিনি ক্লাস করান। শিক্ষার্থী কম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, হঠাৎ ঠান্ডা শুরু হয়েছে; তাই কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এমনিতে ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন নিয়মিত আসে বলে দাবি তাঁর।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন বলেন, ‘সরকার যে উদ্দেশ্যে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প চালু করেছিল, সেটি কোনোভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে না। অধিকাংশ কেন্দ্র শিক্ষক-শিক্ষার্থীশূন্য থাকলেও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করে ভাগ-বাঁটোয়ারা হচ্ছে। আমরা চাই এসব প্রকল্প সঠিকভাবে চলুক, না হয় সরকার বন্ধ করে দিক।’

Manual1 Ad Code

বিয়ানীবাজার উপজেলার ফিল্ড সুপারভাইজার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার বেশীরভাগ কেন্দ্র সঠিকভাবেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে কিছু কেন্দ্রে সমস্যা রয়েছে। এরপরও আপনারা কোনো কেন্দ্রে অনিয়ম পেলে বলেন, আমি ব্যবস্থা নেব।’

শেয়ার করুন