Beanibazarer Alo

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতিথি পাখি আর পর্যটক বরণে প্রস্তুত হাকালুকি আর বাইক্কা বিল

admin

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৪:৫৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৪:৫৮ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
অতিথি পাখি আর পর্যটক বরণে প্রস্তুত হাকালুকি আর বাইক্কা বিল

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
বছরের এই সময়ে হাকালুকি আর হাইল হাওরের বাইক্কা বিলের অন্যরকম রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। দলে দলে অতিথি পাখিরা আসে উত্তর গোর্লাধের শীত প্রধান দেশ থেকে। একটু উষ্ণতা আর খাবারের নিশ্চয়তায়। পুরো শীত মৌসুম এরা দাপিয়ে বেড়ায় বাইক্কা বিল আর হাকালুকি হাওরের বিল থেকে বিলে। আর বসন্তের শুরুতেই অস্থায়ী নিবাস গুটিয়ে উড়াল দেয় নিজ দেশের আপন নীড়ে।

এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। নানা জাত ও বর্ণের অতিথি পাখির কলকাকলিতে সরগরম হয়ে উঠেছে হাকালুকি হাওর ও বাইক্কা বিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গেল প্রায় ১৫-২০ দিন আগে থেকেই হরেক রকমের হাঁস জাতীয় অতিথি পাখির দেখা মিলছে বাইক্কা বিল ও হাকালুকি হাওরের প্রতিটি বিলে। এখন হাওরের বিলগুলোতে কমবেশি দলবেঁধে পরিযায়ী পাখি ও তাদের সঙ্গে দেশীয় পাখির অবাধ বিচরণ দৃশ্যমান। পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজে হাওর পাড়ের চারপাশ মুখরিত হয়ে উঠছে।

Manual5 Ad Code

তারা জানালেন এসকল অতিথি ও দেশীয় পাখি রক্ষায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের চরম উদাসীনতাসহ নানা সমস্যা ও সংকটের মধ্যেও এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে দেশের সবচেয়ে বড় ও এশিয়ার অন্যতম হাওর হাকালুকি আর বাইক্কা বিল। বলা চলে স্বগুণেই খ্যাতি আর পরিচিতি হাওর হাকালুকি আর হাইল হাওরের বাইক্কা বিলের। নানা প্রজাতির উদ্ভিদ, জলজ আর উভয়চর প্রাণির আবাসস্থলের জন্য যেমন হাকালুকি। তেমনি দেশীয় নানা জাতের মাছ ও পাখির অভয়ারণ্যের জন্য বাইক্কা বিল। দু’টিরই অবস্থান একই জেলার দুই সীমান্তে। শীত আর গ্রীষ্ম দু’মৌসুমে এই দু’টি স্থানের প্রকৃতির দু’ধরনের রূপ সৌন্দর্য। প্রকৃতির এমন উজাড় করা রূপ মাধুর্য আকৃষ্ট করে যে কাউকে। বর্ষায় দু’চোখজুড়ে থই থই পানি।

হাকালুকি হাওর: স্থানীয়ভাবে প্রবাদ আছে হাওর মানে হাকালুকি আর সব কুয়া (কূপ)। আর ব্যাটা (পুরুষ) মানে মান মনসুর আর সব পুয়া (ছেলে)। নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ, পাখি, শাপলা-শালুক, ঝিনুক, শত প্রজাতির জলজপ্রাণী আর হিজল, করচ, বরুন, আড়ং, মূর্তা, কলুমসহ সবুজের ঢেউ জাগানিয়া মনকাড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ। হাকালুকির সীমানা মৌলভীবাজার জেলা ছাড়িয়ে সিলেট পর্যন্ত বিস্তৃত। ৫টি উপজেলা (কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ) জুড়ে ২৩৮টি বিল নিয়ে এ হাওরের আয়তন ২০ হাজার ৪ শত হেক্টর। নাব্যতা হ্রাসসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা হাকালুকি এখন কোনোরকম তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। শীত মৌসুম এলেই এখানে অতিথি পাখির আগমনের অপেক্ষায় থাকেন পাখিপ্রেমীরা। পাখিদের কল-কাকলিতে মুখরিত দৃষ্টিনন্দন এ অপরূপ দৃশ্য দেখতে। এ কয়দিনের জন্য ওরা হাওরপাড়ের হিজল, করচ, বরুণ, আড়াং গাছেই গড়ে তুলে তাদের অস্থায়ী নিবাস। প্রত্যুষে কিংবা গোধূলিলগ্নে পাখিদের ওড়াওড়ি, ডুবসাতার, জলখেলি, খুনসুটি, রোদে পালক পোহানু আর খাবার নিয়ে ঝগড়া কিংবা খাবার সংগ্রহের মনোহর দৃশ্য এখন হাকালুকির সবক’টি বিলে।

Manual6 Ad Code

বাইক্কা বিল: ৪২৫ দশমিক ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই বিলের সুনাম প্রকৃতিপ্রেমীদের মুখে মুখে।

Manual6 Ad Code

নয়নাভিরাম প্রকৃতি। নানা জাতের গাছ, মাছ আর পাখি। বিলের পাড়ে সবুজ ঘন বন। ওখানেই স্থায়ী নিবাস ঘরা পাখি আর পোকা মাকড়ের ডাক নিস্তব্ধতা ভেঙে ভিন্ন আমেজ। সংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী- বাইক্কা বিলে প্রায় ৯৮ প্রজাতির মাছ ও ১৬০ প্রজাতির পাখির অভয়াশ্রম। বাইক্কা বিল মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের প্রায় ১শ হেক্টর আয়তনের একটি জলাভূমির নাম। যেটিকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় এই বিল মাছের অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে বিলটি পাখি ও মাছের অভয়াশ্রমের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছে।

Manual5 Ad Code

শেয়ার করুন