ধোনিদের মর্যাদার লড়াই, টানা শিরোপায় চোখ গুজরাটের
২৮ মে ২০২৩, ০৬:১৮ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রায় দু’মাসের ম্যারাথন ক্রিকেটযজ্ঞ শেষের পথে। ১৬তম আইপিএলের শিরোপার লড়াইয়ে রাতে মাঠে নামছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস ও হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্স। টুর্নামেন্টের সেরা দুই দলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কারা ঘরে শিরোপা তুলতে পারে সেটিই এখন দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এর আগে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে দুই দলই। ধোনির চেন্নাই আইপিএলের দ্বিতীয় সফল দল। মুম্বাইয়ের (সর্বোচ্চ পাঁচবার) পর চারবার শিরোপা জিতেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ১৬তম আইপিএলে দশম বার ফাইনাল খেলছে চেন্নাই। এর মধ্যে চার বার জিতেছে। অর্থাৎ বাকি ছয়বার হারতে হয়েছে ধোনিদের। অন্যদিকে, গেল বছর আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজির লিস্টে নাম লিখিয়ে প্রথম বছরেই শিরোপা ঘরে তুলেছিল গুজরাট টাইটান্স। এবারো শিরোপার হাতছানি তাদের সামনে। টানা দু’বার আইপিএল ফাইনাল খেলবেন হার্দিক পান্ডিয়ারা।
চলতি আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছিল আসরের দুই ফাইনালিস্ট। সেবার আহমেদাবাদে গুজরাট জিতেছিল পাঁচ উইকেটে। পরে প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবার মুখোমুখি হয় চেন্নাই এবং গুজরাট। প্রতিশোধের ম্যাচে ১৫ রানে জিতে সরাসরি ফাইনালের টিকিট পেয়ে যান ধোনিরা। গুজরাট দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে। এবার ট্রফির লড়াইয়ে তারা। মঞ্চও সেই উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। সব মিলিয়ে এই দুই দল আইপিএলে মুখোমুখি হয়েছে চারবার। গুজরাটের জয় ৩টি, চেন্নাই জিতেছে একটি।
চেন্নাইয়ের হয়ে ব্যাট হাতে রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ডেভন কনওয়েরা দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন। কিছু ম্যাচে রান পেয়েছেন শিবাম দুবে। বল হাতে তরুণ পেসার মাথিশা পাথিরানা ভয় ধরাচ্ছেন ব্যাটারদের মনে। স্পিনারদের মধ্যে জাদেজা এবং মাহেশ থিকসানা ছন্দে রয়েছেন। ফাইনালেও তাদের ওপর ভরসা রাখছেন ধোনি।
অন্যদিকে, এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক এবং উইকেটশিকারি গুজরাট টাইটান্সের শুভমান গিল এবং মোহম্মদ শামি। তারা ছাড়াও ধারাবিকতা দেখাচ্ছেন সাই সুদর্শন, হার্দিক পান্ডিয়া, ডেভিড মিলারা। বল হাতে বিপক্ষের ওপর স্পিনের জাদু দেখাচ্ছেন রশিদ খান এবং নুর আহমেদ। পেসারদের মধ্যে শামি ছাড়াও আছেন জস লিটল এবং মোহিত শর্মা।
ফাইনাল খেলতে নামার আগে গুজরাট দলের ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট বিক্রম সোলাঙ্কি বলেন, চেন্নাই সুপার কিংস যা করেছে আমরা সেটাকে সম্মান করি এবং প্রশংসা করি। চেন্নাই দুর্দান্ত দল। অনেক বছর ধরেই তারা ভাল খেলছে। আমরা সেটাকে সম্মান করি। সব প্রতিপক্ষকেই আমরা সম্মান করি। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসী যে কোনো দলের বিরুদ্ধে খেলার ব্যাপারে। অন্যদিকে, চেন্নাই কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং বলেন, ফাইনালে আমরা পরিবেশ, পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছি না। দু’রকমের পিচ রয়েছে আমদাবাদে। কোনো একটা বেছে নেওয়া হবে। কিন্তু আমরা সেটি নিয়ে চিন্তা করছি না। গত বারের থেকে অনেক ভাল জায়গায় রয়েছে আমাদের দল।
হার্দিক পান্ডিয়ার মাঝে ধোনির ছায়া রয়েছে বলে মনে করেন অনেক সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা। গেল বছর প্রথমবার অধিনায়ক হয়েই নবাগত গুজরাট টাইটান্সকে আইপিএল শিরোপা জিতিয়েছিলেন হার্দিক। এবারো তার নেতৃত্বে রীতিমতো উড়ছে সবে দ্বিতীয় আসর খেলা গুজরাট। আজকের ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ধোনি ও হার্দিকের নেতৃত্বগুণ।
আকুওয়েদারের রিপোর্ট অনুযায়ী, আহমেদাবাদের আবহাওয়া সকালের দিকে খুব ভালো এবং রৌদ্রোজ্জ্বল থাকবে, কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ আবহাওয়ার মেজাজ বদলে যাবে এবং কালো মেঘে ঢেকে যাবে। বলা হচ্ছে সন্ধ্যায় ৬৮ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে ৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ৭৮ শতাংশ মেঘলা থাকবে এবং আর্দ্রতার সম্ভাবনা ৬৩ শতাংশ। গত বছর আইপিএলের ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে থাকলেও এই বছর তা রাখা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আজকের ফাইনাল ম্যাচ যদি বৃষ্টিতে ভেসে যায় তাহলে লিগ পর্বের পয়েন্ট টেবিলের ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন দল নির্ধারণ করা হবে।
আইপিএল ২০২৩-এর পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকালে, গুজরাট টাইটান্স ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ছিল, চেন্নাই সুপার কিংস ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। বৃষ্টিতে যদি পুরো ম্যাচ ভেস্তে যায় তবে এমন পরিস্থিতিতে গুজরাট টাইটান্সকে বিজয়ী দল বলে ঘোষণা করা হবে।
সম্ভাব্য একাদশ
গুজরাট টাইটান্স-শুভমান গিল, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), সাই সুদর্শন, হার্দিক পান্ডিয়া (অধিনায়ক), বিজয় শঙ্কর, ডেভিড মিলার, রাহুল তেওয়াটিয়া, রশিদ খান, নূর আহমেদ, মোহাম্মদ শামি এবং মোহিত শর্মা।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার- জশ লিটল।
চেন্নাই সুপার কিংস-ডেভন কনওয়ে, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, আজিঙ্কা রাহানে, শিবাম দুবে, আম্বাতি রায়ডু, মঈন আলি, রবীন্দ্র জাদেজা, এমএস ধোনি (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), দীপক চাহার, তুষার দেশপান্ডে এবং মহেশ থিকশানা।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার – মাথিশা পাথিরানা।