ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

Daily Ajker Sylhet

admin

২১ মে ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ


ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হয়েছেন হেলিপকপ্টার দুর্ঘটনায়। রোববার একটি জলাধার উদ্বোধন শেষে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরে যাওয়ার সময় এক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।

এ সময় তার সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ছিলেন। তার মৃত্যুর পর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এর আগে সোমবার বিবিসি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই।

হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট তিনি। একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ইব্রাহিম রাইসিকে মনে করা হয় একদিন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন।
ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

প্রেসিডেন্ট রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা। ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে তিনি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন ছড়ায় এর সঙ্গে মোসাদের সম্পৃক্ততা আছে। কিন্তু ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কেউই মুখ খুলছিলেন না। তাই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত মুখ খুলেছেন একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা। রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের সঙ্গে ইসরাইলের ভূমিকা কী জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ওই ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেন, আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।
ইসরাইল সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। বলা হচ্ছে, রাইসির মৃত্যুতে সরাসরি লাভবান হবে ইসরাইলই। কেননা রাইসির ছত্রছায়াতেই মধ্যপ্রাচ্যে তেজবান হয়েছে বিভিন্ন মিলিশিয়া গ্রুপ। আর গাজায় ইসরাইলকে জিততে না দেওয়ার পেছনে ইরানি অস্ত্র ও মিলিশিয়াদের সমর্থন রয়েছে বলেই দীর্ঘদিনের অভিযোগ তেল আবিবের।

 

Sharing is caring!